পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নেতা মন্ত্রীর নাম উঠে আসছে সিবিআই ও ইডির তালিকায়। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে উঠে এল বিস্ফোরক অভিযোগ। ডিএলএড কলেজ থেকে অফলাইন রেজিস্ট্রেশনের নামে নেওয়া হয়েছিল মোটা অংকের টাকা। সেই টাকার অংক দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩১ কোটির কাছাকাছি। আদালতে দাঁড়িয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এমনটাই দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনটি সেশনে ৬০০ বেশি ডিএলএড কলেজ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য মাথাপিছু নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার টাকা। আর সেই টাকা সরাসরি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এর কাছে গিয়ে পৌঁছাত বলে দাবি ইডির।
সূত্রের খবর অনুযায়ী জানাই গিয়েছে, যারা নিয়ম ভঙ্গ করে অফলাইনে ভর্তি হয়েছিলেন তারা পরবর্তীকালে ঘুষ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন কিনা তা এবার খতিয়ে দেখতে চায় ইডি। আর সেই জন্যই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মন্ডল এর কাছে অফলাইনে আবেদনকারীদের তালিকা চেয়ে বসলো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
গত মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে দাঁড়িয়ে টেট দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এর পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের রাখার আর্জি জানায় ইডির আইনজীবী ফিরোজ। এছাড়াও ইডির আইনজীবী আদালতে সওয়াল করেন, তদন্তে একটি জয়েন্ট একাউন্টের হদিস মিলেছে যেটি বহু পুরনো। ওই জয়েন্ট অ্যাকাউন্টটি মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী এবং মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী বলে একজনের নামে। তবে মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী ২০১৬ সালে পরলোক গমন করেন। তারপরেও অ্যাকাউন্টটি এখনো পর্যন্ত বন্ধ হয়নি। বর্তমানে ওই একাউন্টে ৩ কোটি টাকা রয়েছে যা চাকরি বিক্রির টাকা বলেই মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
শুধু তাই নয়, মানিক ভট্টাচার্যের ছেলের সংস্থার একাউন্টে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও মানিক ভট্টাচার্য ও তার আত্মীয়দের কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। তবে দিন যতই বাড়ছে, টাকার অংকের পরিমাণটাও ততোই বেড়ে চলেছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, মানিক ভট্টাচার্যের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময়ে একটি সিডি পাওয়া যায়, যার মধ্যে ৪ হাজার প্রার্থীর নাম ও রোল নাম্বার পাওয়া গিয়েছে এবং যার মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন বলেও খবর রয়েছে।