পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ গত মঙ্গলবার নারায়নপুর এলাকায় মারোদায় মাওবাদী অভিযানে গিয়ে ঘটল বড় বিস্ফোরণ। জাওয়ানেরা বাসে করে যাচ্ছিলেন অভিযানে। আচমকাই বিস্ফোরণের শিকার হয় ওই বাস। ওই বিস্ফোরণে পাঁচটি বীর জাওয়ান এর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ৫ জন জাওয়ান প্রাণ হারালেন। ওই পাঁচ জন বীর জাওয়ানের মধ্যে একজন ছিলেন ছত্রিশগড়ের রায়পুর এর বাসিন্দা দেবকরণ দেহরি। সূত্রে খবর, কিছুদিন পরেই তরুণ দেবকরণ দেহরির নতুন জীবন সঙ্গীর সঙ্গে ঘর বাঁধার কথা ছিল। বিয়ের দিনক্ষণও ঠিক হয়ে গিয়েছিল ওই জাওয়ান এর। প্রায় ১০ বছরের প্রেমিকার সঙ্গেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল তার।
আত্মীয়-স্বজন সব জায়গাতেই পৌঁছে গিয়েছিল নিমন্ত্রণ পত্র। ২১ শে এপ্রিল তাদের শুভ বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। বীর জওয়ান দেবকরণ দেহরি জানিয়েছিলেন, নারায়নপুর এলাকায় মাওবাদী অভিযান শেষ করেই তিনি ফিরে আসবেন।
বিয়ের আগেই ছেলে ঘরে ফিরে আসবে এমনটাই কথা দিয়েছিলেন বীর জওয়ান। তবে তিনি যে কফিনবন্দি হয়ে বাড়ি ফিরে আসবেন সেটা কখনো ধারণা করতে পারেনি কেউ। তাকে আত্মীয়-স্বজন সহ পাড়া পড়শী সবাই খুব ভালোবাসতেন। ভারত মাতার তেরঙ্গা জড়িয়ে কফিনবন্দি অবস্থায় বাড়ি ফিরলেন বীর জওয়ান। এই পরিস্থিতিতে শোকাহত পরিবার সহ গোটা এলাকা বাসি।
সূত্রে খবর, বীর জওয়ানের বন্ধু ডক্টর সত্যেন্দ্রনাথ নাগ জানিয়েছেন, “২১ শে এপ্রিল আমার বন্ধুর বিয়ের কথা পাকা হয়েছিল। ইতিমধ্যে বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গিয়েছে এবং নিমন্ত্রণ পত্র বিলি করা হয়ে গিয়েছে। আমার বন্ধু আমাকে বলেছিল, মারোদার মাওবাদি অভিযান শেষ হলেই বাড়ি ফিরে যাবে। কিন্তু সে এমন ভাবে ভারত মাতার তিরঙ্গায় মুড়ে বাড়ি ফিরবে। আমরা কেউ ভাবতে পারিনি।”
দেব করনের হবু স্ত্রী ও এই ঘটনাটিকে বিশ্বাস করতে পারছেন না। প্রায় ১০ বছর ধরে সম্পর্ক তাদের দুজনের। এত বছর পর নতুন ঘর বাঁধতে চলেছিলেন দুজন মিলে। সম্প্রতি একটি সরকারি চাকরি ও পেয়েছিলেন ওই তরুণী। কত আশা বুকে বেঁধে ছিলেন হবু স্ত্রী। হঠাৎ করে সুখের অন্দরমহলে কালো ছায়া নেমে এলো। মুহূর্তের মধ্যেই শেষ হয়ে গেল সব।