পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। বিরোধীরা নিত্যদিন নতুন নতুন অস্ত্রে আক্রমণ শানাচ্ছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর। এরই মধ্যে এসএসসির নবম দশম নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ করলো সিবিআই। ঠিক কিভাবে ওএমআর শিটে জালিয়াতি হয়েছিল? কারা বদলে দিয়েছিল নম্বর? সেই রিপোর্টই গতকাল আদালতে পেশ করে সিবিআই। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সিবিআই এর পক্ষ থেকে তাদের আইনজীবী এক মুখবন্ধ খামে এই রিপোর্ট পেশ করেন।
এর আগে সিবিআই আদালতের জানিয়েছিল যে, এই মামলায় ২০ জন প্যানেল ভুক্ত এবং ২০ জন ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীর নম্বরে কারচুপি করা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পরপর প্রত্যেকটি ওএমআর শিট এবং তাদের প্রাপ্ত নম্বর পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন সিবিআইকে। আদালতের নির্দেশমতো ওএমআর সিট এবং প্রাপ্ত নম্বর মিলিয়ে দেখতে গিয়েই চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায় সিবিআই আধিকারিকদের।
সিবিআই তদন্ত করতে গিয়ে দেখে, যে সমস্ত প্রার্থীরা সাদা খাতা জমা দিয়েছেন তাদের প্রাপ্ত নম্বর দেওয়া হয়েছে ৫৩। যে সমস্ত ওএমআর সিটে প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর মাত্র ১, এসএসসি হার্ডডিক্সে সেই সমস্ত প্রার্থীদের নামের পাশে ৫১ বলে উল্লেখ করা রয়েছে। গাজিয়াবাদ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি হার্ডডিক্স ও এসএসসি দপ্তরে প্রাপ্ত একটি হার্ডডিক্সের প্রার্থীদের নম্বর তালিকা মিলিয়ে দেখে এই সমস্ত ভুয়া চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা তৈরি করতে নেমে পড়েছে সিবিআই এর আধিকারিকরা। এখনো পর্যন্ত এইভাবে নম্বরে কারচুপি করে চাকরি পেয়েছেন এমন ২২৩ জনের তালিকা আদালতের নির্দেশে প্রকাশ করেছে এসএসসি।
এই ২২৩ জনের পর আরো ৪০ জনের ওএমআর শিট প্রকাশ করেছে এসএসসি। এর মধ্যে এমন চাকরি প্রার্থীরাও রয়েছে যারা ঠিকমতো নিজেদের নাম কিংবা রোল নাম্বার টুকুও লিখতে পারেন নি। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, আজ তাদের পক্ষ থেকে আইনজীবী যে রিপোর্ট বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে পেশ করেছেন, তাতে কার নির্দেশে, কারা এবং কিভাবে নম্বর বদল করেছে সমস্ত জালিয়াতির বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। আর এই রিপোর্ট প্রকাশে আসলে আরো অনেক বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।