পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলার মানুষ পোস্ত-প্রেমী হলেও, পোস্ত চাষ করলেই হাজতবাস অবশ্যম্ভাবী। কারণ বাংলায় পোস্ত চাষ আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু বাঁকুড়া এবং পশ্চিম-বর্ধমান জেলার সীমান্ত বরাবর দামোদর নদের চড়গুলিতে একপ্রকার অসাধু কৃষকশ্রেণী পোস্তের চাষ করে থাকেন। এবার সেই চাষ বন্ধ করতেই আরও কড়া হচ্ছে প্রশাসন।
পশ্চিমবঙ্গ পোস্ত চাষ করা বেআইনি। তার অন্যতম কারণ মাদকদ্রব্য উৎপাদন। পোস্তের ফল ও খোসা দিয়ে তৈরি হয় ব্রাউন সুগারের মতো মাদকদ্রব্য। তাই মোটা টাকা লাভের আশায় অবৈধভাবে বাঁকুড়া ও পশ্চিম-বর্ধমানের কিছু শ্রেণীর কৃষকরা দামোদর নদীর চড়গুলিতে পোস্তের চাষ করে থাকে। এবার সেই চাষ ধরতে বাঁকুড়া জেলার আবগারি দপ্তর আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে।
আপাতত আবগারি দপ্তর ড্রোন উড়িয়ে আকাশপথে সমীক্ষা চালিয়ে চাষের জমি চিহ্নিত করার কাজ চালাচ্ছে। এই চড়গুলিতে পুলিশের দ্বারা সহজে পৌঁছানো সম্ভব নয়, তাই আবগারি দপ্তর এই ব্যাপারটি ড্রোনের মাধ্যমে দেখে নিতে চাইছেন দামোদর নদের কোন কোন চরে, কত এলাকায় পোস্তের চাষ হয়েছে।
আবগারি দপ্তরের ধারণা, এই বছরও দামোদরের চরে প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে পোস্তের চাষ হয়েছে। সমীক্ষার পর জমি চিহ্নিত করে ওই জমিগুলিতে রোটার চালিয়ে সমস্ত গাছ নষ্ট করে দেওয়া হবে। এর আগেও একবার মালদা জেলাতে একই ভাবে ড্রোন উড়িয়ে পোস্ত চাষের জমি চিহ্নিতকরণ করেছিল আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা।
মালদা জেলার কালিয়াচকে শীতের শুরুতে, ভুট্টা ক্ষেতের আড়ালে পোস্তের চাষ করা হতো। এমন সুনিপুণভাবে চাষ করত কৃষকরা যে, পুলিশের নাগালের বাইরে থাকত পুরো ব্যাপারটি। মালদা জেলার কালিয়াচক-১, কালিয়াচক-২ এবং কালিয়াচক-৩ ব্লকে সবথেকে বেশি পরিমাণ পোস্তের চাষ হতো।
এছাড়াও ইংরেজবাজার ব্লকের গ্রামাঞ্চল, চাঁচল-১, চাঁচল-২, গাজল, বামনগোলা এবং হবিবপুর ব্লকের বিভিন্ন এলাকাতেও এভাবে লুকিয়ে পোস্তর চাষ চলত। তাই পূর্বের সাফল্যের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বর্ধমান ও বাঁকুড়াতে অভিযান চালাতে চাইছে আবগারি দপ্তর।