পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ মহামারী করোনার জেরে লকডাউন এরপর থেকে বেড়ে চলেছে এটিএম জালিয়াতি। তবে শুধু এটিএম জালিয়াতি বলাটা ভুল হবে। এটিএম জালিয়াতি ছাড়াও নেট ব্যাঙ্কিং, গুগোল পে, ফোন পে, এবং পেটিএম এর মাধ্যমেও জালিয়াতির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
এবার হাওড়ার শিবপুরের রজনীকান্ত রায়চৌধুরী লেনের বাসিন্দা অপূর্ব ভঞ্জ ব্যাংক জালিয়াতির শিকার হলেন। তিনি সম্প্রতি একটি রং প্রস্তুতকারী সংস্থার কেমিস্ট এর পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। অবসরের পর তিনি পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক ও উজ্জয়নী স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংক এ সঞ্চিত অর্থ জমা রেখে ছিলেন। ৯ লক্ষ টাকা ব্যাংক জালিয়াতি শিকার হলেন তিনি।
পিএনবি ডেবিট কার্ডের জন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। সেই টাকা ফেরত আনতে গিয়ে সর্বস্ব হারালেন অপূর্ব ভঞ্জ। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক কে একাউন্ট ছিল। ডেবিট কার্ডের জন্য তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫০ টাকা কেটে নেওয়া হয়। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টে ৪৫০ টাকা পাওয়ার জন্য তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেন।
তিনি ইন্টারনেট থেকে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ারের নাম্বার জোগাড় করেন এবং সেই নাম্বারে যোগাযোগ করেন। অপূর্ব জানান, ওই নাম্বারে ফোন করে রাহুল সরস্বতী নামে এক যুবকের সাথে কথা বলেন তিনি। ওই অপরিচিত যুবক পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার এক্সিকিউটিভ হিসেবে পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। এবং অপরিচিত যুবক তাকে জানান, চিন্তার কোন কারণ নেই। সমস্ত কিছু ঠিক আছে। আপনি খুব শীঘ্রই ৪৫০ টাকা ফেরত পাবেন। ওই যুবক তাকে টাকা ফেরতের ব্যাপারে আশ্বস্ত করে বলে অভিযোগ।
কিছুক্ষণ পরে ওই অপরিচিত যুবক ফোন করে জানান টেকনিক্যাল ইস্যুর কারণে নির্দিষ্ট একাউন্টে টাকা জমা হচ্ছে না। আপনার অন্যত্র ব্যাংক একাউন্ট থাকলে অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিতে পারেন। অপূর্ব বাবুর আরেকটি উজ্জীবন স্মল ফাইন্যান্স ব্যাংক এর একাউন্ট ছিল। ওই ব্যাংক একাউন্টে অপূর্ব বাবুর ফিক্স ডিপোজিটের টাকা ছিল। তিনি ওই নম্বরটি ওই অপরিচিত ব্যক্তির হাতে তুলে দেন।
অপূর্ববাবু ৪৫০ টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় কথোপকথনের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ডিটেলস সহ সবকিছু অপরিচিত যুবকের কাছে হস্তক্ষেপ করে। এমনকি ফোনে আসা ওটিপি ও। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ফিক্স ডিপোজিটের টাকা মেন সেভিংস একাউন্টে ট্রানস্ফার করে। তারপর বিভিন্ন ওয়ালেট এর মাধ্যমে টাকা সরিয়ে ফেলা হয় অন্যত্র একাউন্টে। ওই যুবক দুটো ব্যাংক থেকে মোট ৯ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ অপূর্ব বাবুর।
অপূর্ববাবু জানিয়েছেন, বিভিন্ন ওয়ালেট এর মাধ্যমে টাকা সরিয়ে ফেলা হয়েছে কিন্তু আমার ফোনে কোনও এসএমএস ঢোকেনি। তিনি জানান এসএমএস এর বদলে ইমেইল করে জানানো হয় তাকে। কিন্তু সেই মুহূর্তে ইমেইল চেক করার মত সুযোগ পাননি তিনি। পরে যখন তিনি ইমেইল চেক করলেন জানতে পারলেন অ্যাকাউন্ট থেকে বেশিরভাগ টাকায় গায়েব হয়ে গেছে।
তৎক্ষণাৎ দেরি না করে অপূর্ববাবু শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং পাশাপাশি হাওড়া সিটি পুলিশ এর সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বোটানিক্যাল গার্ডেন থানার পুলিশ। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি বলে খবর।