পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ করোনার সুনামি বয়ে চলেছে গোটা দেশজুড়ে। এরাজ্যে ও প্রতিনিয়ত সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। দৈনিক মৃত্যুর হার বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে টিকাকরণই একটিমাত্র পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে করোনা সংক্রমনের জেরে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন জারি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গেও লকডাউন জারি করা হয়েছে ১৫ দিনের জন্য। তবে লকডাউন এর মধ্য দিয়ে টিকাকরণ করা হবে কিনা তা জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্য জুড়ে লকডাউন জারি থাকলেও তার মধ্য দিয়ে কোভিড বিধি মেনে দেওয়া হবে টিকা।
করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “টিকা দেওয়া সব সময় রাজ্যের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। এবারও তার অন্যথা হবে না। যাদের নিজস্ব গাড়ি রয়েছে তারা তাদের সেই গাড়ি নিয়ে টিকাকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন।” রাজ্য সরকারের নির্দেশ পাওয়ার পরেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে জোর দিতে শুরু করেছে কলকাতা পৌরসভা। তবে লকডাউন এর মধ্য দিয়ে কলকাতা পৌরসভায় নতুন আইন চালু করা হয়েছে, যাকে বলা হচ্ছে প্রি অ্যাপোয়েন্টমেন্ট ব্যবস্থা।
করোনার টিকা নেওয়ার জন্য বাড়িতে বসেই নাম নথিভুক্ত করিয়ে নিতে পারবেন। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বিভ্রান্তি আর নয়। ফোনের মাধ্যমে আপনি সবকিছু জানতে পারবেন যে, কখন আপনার টিকা দেওয়া হবে এবং কোথায় আপনার টিকা দেওয়া হবে। কোভিড বিধি মেনে দেওয়া হবে কোভিড ভ্যাকসিন। তাই বিশেষ করে টোল ফ্রি নাম্বার এর ব্যবস্থা করা হয়েছে পৌরসভার তরফ থেকে।
টিকাকরণের সুবিধার্থে ব্যবহার করা হয়েছে এই নাম্বার ৮৩৩৫৯৯৯০০০। পৌরসভার তরফ থেকে দেওয়া এই নাম্বারটিতে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলা রয়েছে। যার মাধ্যমে কোভিড টিকা নেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করে ফেলতে পারবেন খুবই সহজে। তবে জানিয়ে রাখি, এই প্রি বুকিং শুধুমাত্র যারা করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেবেন তাদের জন্য। প্রি বুকিং এ বুকিং করতে গেলে হোয়াটসঅ্যাপে আপনার নাম, ঠিকানা এবং প্রথম ডোজ এর প্রমাণ টি পাঠাতে হবে।
প্রথম ডোজ নেওয়ার সময় আপনার ফোনে একটি ম্যাসেজ এসে থাকবে। প্রথম ডোজের প্রমাণ হিসেবে এই মেসেজটি গ্রহণ করা হবে। কলকাতা পৌরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনো পর্যন্ত কলকাতায় ১৪৫ টি সেন্টার ও টেস্টিং সেন্টার চালানো হচ্ছে করোনা টিকা করনের জন্য। জানা গিয়েছে এই লকডাউন চলাকালীন এই টিকাকরণ ব্যবস্থা চালু থাকবে।
বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী ও পৌরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে, অনেকের পক্ষেই টিকা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই এখন থেকে বাড়িতে বসেই পৌরসভার দেওয়া এই নাম্বারে হোয়াটসঅ্যাপ করলেই পৌরসভার তরফ থেকে সময় ও স্থান জানিয়ে দেবে। সেখানে গেলেই পেয়ে যাবেন ভ্যাকসিন।” ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “হকার ও পরিবহন কর্মীদের কেউ এবার টিকা দেওয়া হবে।”
জানা গেছে, হকার ও পরিবহন কর্মীদের করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হবে। তাদের জন্য কোথায় সেন্টার করা হয়েছে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার। হকার ও পরিবহন কর্মীরা এলিট সিনেমা হল, হাতিবাগানের সুকান্ত সদন ও মোহিত মঞ্চে গেলে পেয়ে যাবেন টিকা। তবে টিকা নিতে সঙ্গে রাখতে হবে আইডেন্টি কার্ড। পরিচয় পত্র সাথে থাকলে তারা পেয়ে যাবেন করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ।