পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ অতিমারি করোনা হানায় গোটা দেশজুড়ে আকাল দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ইতিমধ্যেই হাহাকার দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন এমনই একজন ব্যক্তি। তিনি নিজেই পাঁচ বছর ধরে অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন। তিনি ‘ক্রনিক অ্যাজমা’ রোগে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তার নিজেরই হাল, বেহাল। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়েই তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছেন মানুষের কাছে।
তিনি যখন বাড়িতে থাকেন অক্সিজেন কনসেনট্রেটর নিয়েই তাকে থাকতে হয় এবং তিনি যখন বাড়ি থেকে বাইরে বের হন তাঁকে সঙ্গে রাখতে হয় অক্সিজেন সিলিন্ডার। তবে তিনি এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে থেমে থাকেননি। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। শুধু তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার নয় সঙ্গে পৌঁছে দিচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্র।
এই কঠিন পরিস্থিতির সময় মহান মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন কাশ্মীরের বাসিন্দা মনজুর আহমেদ। ৪৮ বছরের ওই ব্যক্তিকে নিয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে, তারা মনমোহন ভাবনাকে অনেকেই প্রশংসা করছেন।
আরও পড়ুনঃ এবারে শিশুদেরও দেওয়া হবে করোনার ভ্যাক্সিন, শুরু হলো ট্রায়াল
জানা গিয়েছে, তিনি আগে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি কাজ হারিয়েছেন। বর্তমানে তিনি সংসার চালাতে ছোট্ট একটি মালবাহী গাড়ি চালান। সেই গাড়ির সাহায্যেই তিনি অক্সিজেনের সিলিন্ডার পৌঁছে দিচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে।
মনজুর আহমেদ জানিয়েছেন, “শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হলে কতটা কষ্ট হয় তা আমি জানি। আমার আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তাই বেশিরভাগ মানুষের থেকেই আমি অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম নিচ্ছি। তবে আমি এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে থাকতে চাই। বিভিন্ন স্থানে আমার ফোন নম্বর ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল এর জন্য প্রচুর পরিমাণে ফোন আসে আমার কাছে।”
আরও পড়ুনঃ আজ থেকে আগামী ৩-৪ দিন বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস, জানালো আবহাওয়া দপ্তর
তিনি আরও জানিয়েছেন, “বিভিন্ন স্থানে তাদের ওই অক্সিজেন সিলিন্ডার সারাদিন ধরে আমি পৌঁছেতে থাকি। এছাড়াও করোনা রোগীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও পৌছে দিচ্ছি।” তিনি জানিয়েছে, “কত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে প্রতিনিয়ত কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের সাহায্য করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগে।”
অক্সিজেন সিলিন্ডারের দাম নিচ্ছেন কেন সেদিকটা তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, “প্রতিমাসে আমার নিজের ঔষধ এর খরচ প্রায় ৬ হাজার টাকা। এছাড়াও সংসারে স্ত্রী ও তিন সন্তানের মুখে দুবেলা দুটো অন্ন তুলে দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে আমার উপর।” মনজুর আহমেদ এর মত মহান মানবিকতা মানুষের দেখা খুবই কম পাওয়া যায়। তবে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মনজুর বাবুর মত মহান মানুষের আরও দরকার এই সমাজের।