Dol Purnima, holi, festival, দোল পূর্ণিমা, হোলি, উৎসব
সংসারে সুখসমৃদ্ধি ফেরাতে দোল পূর্ণিমায় আরাধ্যকে ভক্তিভরে পুজো করুন! পূজার সময়, নিয়ম-নিষেধাজ্ঞা

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ এবছর দোল পূর্ণিমা পড়েছে ৬ই মার্চ অর্থাৎ ২১শে ফাল্গুন। তিথি শুরু হয়েছে রবিবার অপরাহ্ন ৪টে ২০মিনিটে। তবে হোলি উৎসবটি পালিত হয় দোলযাত্রার ঠিক পরদিন। ফাল্গুনী পূর্ণিমা তথা দোল পূর্ণিমা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি অত্যন্ত পবিত্র তিথি। দোল পূর্ণিমা তিথি শেষ হবে ৭ই মার্চ অর্থাৎ ২২ শে ফাল্গুন মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৬টা ০২মিনিটে।

বাঙালি যেদিন দোল উৎসব পালন করে, বাকি ভারতবাসী তার পরের দিন হোলি উৎসব পালন করে থাকে। তবে দোলের ঠিক আগের দিন পালিত হয় হোলিকা দহন। স্থান ভেদে তা কোথাও কোথাও চাঁচর, বুড়ির ঘর বা ন্যাড়া পোড়া নামেও পরিচিত। হোলিতে সারা ভারতের সাথে সাথে উৎসবে মেতে ওঠে পূণ্য ব্রজভূমি বৃন্দাবনও। এই দিন বাড়ির আশেপাশ, ঘরের ধুলো এবং মাকড়শার জাল পরিষ্কার করুন। পুরনো, ভাঙ্গা এবং ছেড়া জিনিস বাড়ি পরিত্যাগ করুন। এতে অশুভ শক্তি বা নেগেটিভিটি থেকে বাড়ি মুক্ত থাকবে।

দোল উৎসব বসন্তকালে উদযাপিত হয় বলে একে বসন্ত উৎসবও বলা হয়ে থাকে। হিন্দু ধর্মের মূলত তিনটি ভাগ রয়েছে বৈষ্ণব, শক্ত এবং শৈব। এদের মধ্যে দোলযাত্রা মূলত বৈষ্ণবদের পর্ব। বৈষ্ণব ধর্মালম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমাতে বৃন্দাবনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আবির ও রং নিয়ে শ্রী রাধা রাণী ও অন্যান্য গোপীগণের সঙ্গে রং খেলেছিলেন। আর তার থেকেই উৎপত্তি হয়েছে এই দোল উৎসবের।

দোল পূর্ণিমা হিন্দুদের কাছে এক অত্যন্ত পবিত্র তিথি হওয়াতে, শাস্ত্র মতে এই তিথিতে বিশেষ কিছু নিয়ম-কার্য পালন করলে মানুষের আর্থিক, পরমাত্মিক এবং সাংসারিক শ্রীবৃদ্ধি লাভ সম্ভব হয়। এই বিশেষ তিথিতে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে গোপাল পূজা করলে ঈশ্বরের বিশেষ কৃপা লাভ করা যায়। নিম্নে গোপাল পুজোর নিয়ম কারণ সম্পর্কে জানানো হলো। এছাড়া আপনারা নিজেদের আরাধ্য দেবতাদেরও পূজা করতে পারেন এই দিন। এই দিনের পূর্ণিমা তিথিতে নিজেদের বাড়িতে পূজাকে শুভ বলে মানা হয়।

১) পুজোর আগের দিন বাড়ির ঝুল ঝাড়ুন এবং ঘর দুয়ার ভালোভাবে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নিন।
২) রান্না ঘরে মজুত রাখা মসলা বা খাবারের কৌটো পরিষ্কার করে ধুয়ে মুছে নিন এবং খেয়াল রাখতে হবে পরিষ্কার করার পর সেগুলি যেন ফাঁকা না থাকে অর্থাৎ কিছু না কিছু ভরে রাখবেন।
৩) দোল যাত্রার আগের দিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে বাড়ির মূল দরজার সামনে এক বালতি জল রেখে দিন। পুজোর দিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই দরজার সামনে সেই জল ঢেলে ধুয়ে ফেলুন।
৪) দোল যাত্রার দিন সকাল সকাল স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করুন।
৫) স্নান করার জলে দুটো তুলসী পাতা ফেলে তবে স্নান করুন। স্নান করার পর পূর্ব দিক ফিরে হাত জোড় করে ইষ্ট দেবতার নাম স্মরণ করুন।
৬) গোপাল পুজোর জন্য আলাদা কোনো রীতিনীতি মানার প্রয়োজন নেই। সাধারণ দিনে যেভাবে আপনি পুজো করে থাকেন সেই ভাবেই পুজো করুন। যাদের বাড়িতে গোপাল ঠাকুর নেই, তারা নিজেদের আরাধ্য দেবতাদের পূজা করুন।
৭) পুজো শেষে ভগবানের পায়ে আবেগ দিয়ে প্রণাম করুন। সেই সাথে বাড়ির বয়োঃজ্যেষ্ঠ এবং গুরুজনদের পায়ে আবির দিয়ে প্রণাম সারুন।
৮) পূজার প্রথমে জল-শঙ্খে দুধ অথবা জল দিয়ে ঠাকুরকে স্নান করাতে হবে। এরপর ঠাকুরের গা মুছিয়ে আসনে বসিয়ে ফুল, বেলপাতা এবং তুলসিপাতা অর্পণ করুন।                                                          ৯) আপনার সাধ্যমত ফুল জল মিষ্টি দিয়ে পুজোর প্রসাদ দিন। এছাড়াও ঠাকুরকে ৫ ফল, ভোগ, দুধের তৈরি মিষ্টান্ন দেওয়া যায়।                                                                                                  ১০)গোপালকে মাখন অর্পণ করতে ভুলবেন না।
১১) সম্ভব হলে দুস্থ মানুষজনকে খাদ্যশস্য এবং বস্ত্র দান করুন। দোলযাত্রার দিন খাদ্যশস্য দানকে অত্যন্ত পুণ্য কার্য বলে গণ্য করা হয়।