পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের টাকা আপাতত বন্ধ রাখা হোক লিখে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যে এতদিন কেন্দ্র সরকারের কিষান সম্মান নিধি প্রকল্প চালু না করায় বিজেপির নেতা নেত্রীরা তা নিয়ে কাঠ গড়ায় তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে বিজেপির তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, বঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে কিসান সম্মন নিধি প্রকল্প চালু করা হবে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ২০০-র বেশি আসন পেয়ে জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করার পরে পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্প চালু করার আর্জি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। তারপর সেই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা বঙ্গের কৃষকরা পেয়েছেন ইতিমধ্যেই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্রের এই প্রকল্পের টাকায় দুর্নীতি হতে পারে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, টাকা দেওয়ার আগে বাংলায় প্রতাড়িত কৃষকদের তালিকা একবার ভালো করে পরীক্ষা করে নেওয়া হোক।

গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পকে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি যেমন দুর্নীতির কথা তুলে ধরেছেন। তেমনই কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পকে ঘিরে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। এদিনের সেই চিঠিতে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছেন, “রাজ্যের পাঠানো কৃষকদের তালিকা যেন ভালো করে পরীক্ষা করা হয়। আর সেটা না হওয়া পর্যন্ত বাংলায় পরের দফার টাকা পাঠানো বন্ধ থাকুক।”
আরও পড়ুনঃ পাঞ্জাবে মাঝরাতে ভেঙে পড়ল বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান “মিগ -২১”, মৃত পাইলট
কিছুদিন আগে কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছে রাজ্যের ৭ লক্ষ কৃষক। সেই সূত্রে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “রাজ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে ২৩ লক্ষ কৃষক নির্দিষ্ট পোর্টালে আবেদন করলেও, প্রথম দফার টাকা পেয়েছেন মাত্র ৭ লক্ষ কৃষক। বাকি কৃষকদের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়নি।” সেদিকেও নজর রাখার কথা বলেছেন দিলীপ ঘোষ।
এছাড়াও তিনি ওই চিঠিতে ‘সিন্ডিকেট রাজ’ ও ‘কাটমানি’ প্রসঙ্গ তুলে কথা বলেছেন। দিলীপ ঘোষের দাবি, “বঙ্গে সুবিধা পাওয়ার যোগ্য অনেক কৃষককে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার তোষণের পথে চলে অনেক কৃষককে তাঁদের যোগ্য প্রাপ্য অর্থ থেকে বঞ্চিতও করতে পারে” বলে তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন।

এছাড়াও দীলিপবাবু ওই চিঠিতে আরও লিখেছেন, “কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক। তবে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে না। কারণ এই রাজ্যের তৃণমূল নেতাদের সহযোগিতায় অনেক অনুপ্রবেশকারীর কাছে আধার কার্ড রয়েছে।”
আরও পড়ুনঃ নারদে নাটক অব্যাহত ! চার নেতার জামিন নিয়ে মতভেদ হাইকোর্টের দুই বিচারপতির মধ্যে
দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘এই মুহূর্তে আপাতত কেন্দ্র সরকারের এই প্রকল্পের টাকা পাঠানো বন্ধ রাখা হোক এবং রাজ্যের তরফ থেকে যে তালিকা কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে, সেই তালিকা খতিয়ে দেখা হোক। এছাড়াও রাজ্যের সব জেলাশাসক বিডিও এবং পঞ্চায়েত অফিসেই কৃষকদের আবেদন করার সেই তালিকা থাকুক। যারা এখনো পর্যন্ত পিএম কিষান পোর্টালে আবেদন করার পরেও রাজ্যের ছাড়পত্র পায়নি তাদের বিষয়টা খতিয়ে দেখা হোক।”
এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, “বিষয়টা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের নিয়ে একটি টিম গঠন করা হোক এবং সেই দল রাজ্যে এসে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখুক।” তার মতে, “প্রকৃত গরিব কৃষকরা যাতে এই প্রকল্পের সুবিধা পায় সেই জন্যই তার এই চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো হয়েছে।”