পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ একটি মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে যদি আরেকটি মৃত্যুর ঘটনা জড়িয়ে থাকে তাহলে সেটি রহস্যময় ছাড়া আর কিছুই নয়। এমনই একটা ঘটনা ঘটল রাজস্থানে। ২২ বছরের একটি গর্ভবতী মহিলার মৃত্যুতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে উঠল অভিযোগ। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী চিকিৎসক।
রাজস্থানের ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, চিকিৎসকের গাফিলতির ফলে ২২ বছরের ওই গর্ভবতী মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মৃত ওই গর্ভবতী মহিলার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে এমনকি পার্শ্ববর্তী থানায় এফআইআর দায়ের করে, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এরপরে আত্মঘাতী হলেন চিকিৎসক অর্চনা শর্মা।
চিকিৎসক অর্চনা শর্মা এবং তার স্বামী মিলে একটি বেসরকারি হাসপাতাল চালাতেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের দুটি সন্তানও রয়েছে এবং তিনি আত্মহত্যা করার পূর্বে একটি সুইসাইড নোট ছেড়ে গিয়েছেন। সেটিতে তিনি লিখে গেছেন, “আমি আমার স্বামী এবং সন্তানদের ভালোবাসি। আমার মৃত্যুর পর তারা যেন কষ্ট না পায়। আমি কোনো অন্যায় করিনি এবং কাউকে হত্যা করিনি। প্রসবোত্তর রক্তক্ষরণ একটি পরিচিত জটিলতা; ডাক্তারদের হয়রানি বন্ধ করুন। আমার মৃত্যুই আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারে।”
রাজস্থানের ওই চিকিৎসকের আত্মহত্যার পর রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট স্থানীয় পুলিশ থানার সুপার অনিল কুমারকে সাসপেন্ড করেছেন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পুলিশের ছোট্ট একটা ভুলের জন্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে চিকিৎসক। তবে চিকিৎসকের মৃত্যুর পর তার স্বামী জানিয়েছেন, “২২ বছর বয়সী এক গর্ভবতী মহিলার সন্তান প্রসবের পর একাধিক শারীরিক জটিলতা দেখা দিয়েছিল তার শরীরে। আমারা তাঁকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করি কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এরপর আত্মীয়রা মৃতদেহ নিয়ে গ্রামে ফিরে যান কিন্তু কিছুক্ষণ পরে হাসপাতালে ফিরে আসেন এবং তারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।”
এছাড়াও তার স্বামী আরও জানিয়েছে, “দু ঘণ্টা ধরে, আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি এবং তাকে দুই ইউনিট রক্ত দিয়েছিলাম কিন্তু তাকে বাঁচাতে পারিনি। তার আত্মীয়রা দেখেছে যে আমরা তাকে বাঁচানোর জন্য কত চেষ্টা করেছি এবং হাত জোড় করে স্বীকার করেছি যে আমরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা তাকে বাঁচাতে পারিনি।” এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজস্থানের ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এর পাশাপাশি দিল্লিতে এই মসের আবাসিক চিকিৎসকরা কালো ব্যাজ পরে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন।