
পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০২১ সালের আগস্ট মাসে তালিবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর মাদকদ্রব্য নিষিদ্ধ, অবৈধ ওষুধের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই মর্মে তালিবানরা অবৈধ মাদকের উৎপাদন ও বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য একটি ফরমানও জারি করে। তবে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সুত্রের খবর, তালিবান শাসনের অধীনে আফগানিস্তানের মাদক ব্যবসা বিকাশ লাভ করতে শুরু করেছে।
তালিবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়ে এবং বেকারত্ব আকাশচুম্বী হয়। নাগরিকরা স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য সংগ্রাম করতে শুরু করে। অনেক লোক যারা পূর্ববর্তী সরকার দ্বারা নিযুক্ত ছিলেন, তারা চাকরি হারিয়েছেন এবং তাদের দৈনন্দিন চাহিদা মেটানোর জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এই রূপ প্রতিকূলতার মধ্যে, অনেকেই ইরান, পাকিস্তান এবং তুরস্কের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিতে চলে গিয়েছেন।
সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গিয়েছে যে, তালিবানরা ঘোষণার মাধ্যমে আফগানিস্তানে মাদকের উৎপাদন বন্ধ করার ভান করছে, যাতে দেশে আফিম চাষের উপর আন্তর্জাতিক তদন্ত এড়ানো যায়। কানাডা ভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক, ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর রাইটস অ্যান্ড সিকিউরিটি (IFFRAS) রিপোর্ট করেছে যে, তালিবানরা মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে তাদের বিদ্রোহী অভিযান পরিচালনা করার জন্য একটি কর ব্যবস্থা প্রণয়ন করেছে।
এই অবৈধ মাদক তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের অর্থনীতির সাথে তীব্র ভাবে সম্পৃক্ত। এটি সরকারকে বিপুল পরিমাণে রাজস্বের যোগান দেয়। একটি সমীক্ষা অনুসারে জানা গিয়েছে, তালিবানদের ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মোট বার্ষিক আয়ের মধ্যে, শুধুমাত্র মাদক ব্যবসা থেকেই বছরে প্রায় ৪২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় আসে।
আফগানিস্তান হল বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। এই আফিম পরিশোধন করে হেরোইন উৎপাদন করা হয়। আশঙ্কার কথা এই যে আফগানিস্তান শীঘ্রই হেরোইনের প্রধান সরবরাহকারী দেশ হয়ে উঠবে কারণ তালিবানের অন্দর থেকেই প্রচেষ্টা চলছে। আফিম চাষকে ঘিরেই আফগানিস্তান তাদের বার্ষিক রপ্তানি মূল্য ইউএসডি ১.৫ থেকে ইউএসডি ৩ বিলিয়ন করতে চাইছে বলে জানা গিয়েছে।