কোনো নোবেল পুরস্কার পাননি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, দাবি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর
কোনো নোবেল পুরস্কার পাননি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন, দাবি বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের বিতর্কে নাম জুড়ল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে নোবেল-জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের। বিশ্বভারতীর উপাচার্য শ্রী বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বেফাঁস মন্তব্যের জেরে বিতর্কের সৃষ্টি। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি জবরদখল করে আছেন এবং সেই জমি ফেরত পেতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছেন অমর্ত্য সেনকে।

শুধু তাই ই নয়, ‘রাবীন্দ্রিক’ শব্দ নিয়েও এক বিতর্কিত মন্তব্য করতে সোনা গিয়েছে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে। তিনি আরো দাবি করেছেন যে, তিনি যদি উপাসনাগৃহে না আসেন, তাহলে কেউই আসতে চান না। আর এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে অচীরেই বন্ধ হয়ে যাবে উপাসনাগৃহ।

১৩ ডেসিম্যাল জমি দখল করেছে অমর্ত্য সেন, এমনটাই দাবি করেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত দু’বছর আগে জমি ফেরত চেয়ে অমর্ত্য সেনকে চিঠি পাঠিয়েছিল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, তিনি বিস্তারবাদী ও অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, তাই তাকে বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।

ফের আরও একবার সেই জমি ফেরত্‍ চেয়ে অমর্ত্য সেনকে চিঠি পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অমর্ত্য সেনকে নোটিশ পাঠিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অমর্ত্য সেন কিছুটা অধিক জমি নিয়েছেন। সেই জমি ফেরতের জন্য আগেও জানানো হয়েছে। উনি শান্তিনিকেতনে উপস্থিত থাকার কারণে হাতে হাতে চিঠি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আলোচনা করতে রাজি। বিশ্ববিদ্যালয় চায় না যে, ভবিষ্যতে উনি কোনও সমস্যায় পড়ুক।

যদিও এই প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ওঁদের রুচিবোধ তাতে এমনটা ওদের দ্বারাই মানায়। তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠির পরিপেক্ষিতে যা জবাব দেওয়ার তা তার আইনজীবীই দেবেন।

গত বুধবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, অমর্ত্য সেন একজন আইকন। জমি বিতর্কের মত ছোটখাটো বিষয়ে তাঁর মত বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের নাম জড়ানো উচিত্‍ নয়। তার কি টাকার অভাব আছে? তার এই সব বিতর্ক এড়িয়ে চলা উচিত্‍। যদিও বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মন্তব্যের বিরোধিতা করতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনী সবাইকে।

ঠিক এরপর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তার দাবি, কোনো নোবেল পুরস্কার পাননি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনের বাড়িতে অমর্ত্য সেনের সাথে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর তর্ক বিতর্কে উঠে আসে এই মন্তব্য। তবে শুধু যে মন্তব্য করেছেন তা নয়, এই মন্তব্যের পর্যালোচনাও করেছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

সম্প্রতি জানা গিয়েছে, গত বুধবার অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়িতে যান পড়ুয়া-অধ্যাপকেরা। অমর্ত্য সেন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর ভূমিকা এবং বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি সম্পর্কে। এর পাশাপাশি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কার্যকলাপ সম্পর্কেও সমালোচনা করেন তিনি।

সুত্রের খবর, অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়িতে কথোপকথনের সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সাথে অমর্ত্য সেনের জমি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়। আর সেই সময়ই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী জানান, অমর্ত্য সেন কোনো নোবেল পুরস্কার পাননি। তবে তিনি যে শুধু এই মন্তব্য করেছেন তা নয়, তিনি এই মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।