পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- আবারও একবার মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল ১৪ বছরের কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা ভাঙ্গড়ের গোয়ালবাড়ি এলাকায়। গেম খেলা নিয়ে বকাবকি করাতে এহেন পথ বেছে নেয় ১৪ বছরের এই কিশোরী।
জানা যাচ্ছে, লকডাউন এর কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে এই তরুণী। সারাদিন ঘরে বসে গেম খেলত সে। এই দীর্ঘক্ষন গেম খেলা নিয়ে তার মা বকাবকি করতেই মঙ্গলবার রাতে ওড়না জড়িয়ে গলায় ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই কিশোরী।
পরিবার সূত্রে খবর, লকডাউনের পর স্কুল খুললে মোবাইল গেম এর থেকে কিছুটা হলেও আসক্তি কমেছিল ওই তরুণীর। তবে রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী ২৯ শে জুন পর্যন্ত রাজ্যের স্কুলগুলিতে চলছে গরমের ছুটি। আর গরমের ছুটি চলার কারণে পড়াশোনা বাদ দিয়ে মোবাইল গেমের প্রতি আবারও আসক্তি বেড়ে যায় ওই কিশোরীর। মাঝে মাঝেই তার মা বকাবকি করত তাকে, মোবাইল কেড়ে নিত তার হাত থেকে। কিন্তু এদিন বকাবকির পরে অভিমানে এহেন কাজ করে ফেলে ওই কিশোরী।
মুহূর্তের মধ্যেই ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। কিশোরীর দেহ উদ্ধার করার পর, তাৎক্ষণিক জীরানগাছা ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু ততক্ষনে দেরি হয়ে গিয়েছিল অনেক। হাসপাতালের চিকিৎসকরা মেয়েটিকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত কিশোরীর দেহটিকে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৪ বছরের ওই কিশোরী বাবা ও মায়ের সঙ্গেই থাকত ওই এলাকায়। ওই তরুনির বাবা পেশায় একজন খাটাল মালিক এবং তরুণী স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত। লকডাউনের কারণে স্কুল বন্ধ হওয়ায় মেয়ের অনলাইন ক্লাস করার জন্য একটি মোবাইল ফোন কেনেন তার পিতা। কিছুদিন ভালোভাবে অনলাইন ক্লাস করার পরে মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে ওই তরুণী।
মৃত তরুণীর বাবা জানান, “স্কুল বন্ধ থাকায় অনলাইনে মেয়ের ক্লাস চলছিল। খুব কষ্ট করে একটি মোবাইল কিনেছিলাম। তারপর থেকেই মেয়ে মোবাইল গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। পড়াশোনা না করায় তার মা সামান্য বকাবকি করে। আর সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমি চাই অবিলম্বে সমস্ত স্কুল খুলুক। আমার মতো কোনও বাবা-মা যেন তার সন্তানকে না হারান।”