
পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ চাকরি-দুর্নীতি কান্ডে বারংবার আঙ্গুল উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। স্কুল-শিক্ষক থেকে শুরু করে গ্রুপ-ডি প্রত্যেকটি বিভাগেই কড়া নাড়ছে হাইকোর্ট। হঠাৎই আবার ভাটপাড়া পৌরসভার পৌর-প্রধান দেবজ্যোতি ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে, তিনি টাকার বিনিময়ে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন চাকরি পাইয়ে দেওয়ার।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে নিশ্চয়ই আর ভেঙে বলবার কিছুই নেই। তার কড়া নজরদারি থেকে ছাড় পাচ্ছেন না কোন নেতা-মন্ত্রীরাই। তাই এবার তার নজর পরেছে ভাটপাড়ার পৌরসভার সদস্য দেবজ্যোতি ঘোষের ওপর। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দেবজ্যোতি ঘোষকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নোটিশ পাঠান।
প্রথমে তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতি অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার বিষয়ে খতিয়ে দেখতে শুরু করলে জানা যায় যে, পৌরসভার একজন ভারপ্রাপ্ত সদস্য হওয়া সত্বেও তার নাম নথিভুক্ত রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে। শুধু তাই নয়, তিনি শিক্ষা পর্ষদের একজন উচ্চ পর্যায়ের সদস্য। তারই ক্ষমতা-বলে তিনি সাধারণ মানুষের থেকে টাকা আদায় করে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বিলি করছেন।
বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা দুর্নীতি কাণ্ডের যে মামলার শুনানি ছিল, সেই শুনানিতে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে দেবজ্যেতি ঘোষের বিরুদ্ধে। দেবজ্যোতি ঘোষ নিজে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণী পাশ করে একজন ব্যক্তি কিভাবে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেলেন? শুধু তাই নয়, শিক্ষা পর্ষদেও এই যোগ্যতায় একটি উচ্চপদ অর্জন করলেন কিভাবে? তার পাসপোর্ট থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে যে, তিনি শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণী পাশ।
বুধবার মামলার শুনানিতে এটাও শোনা যায় যে, তিনি কোয়েনা দে নামক এক মহিলার থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন চাকরি দেবার নাম করে। নিজে একটি পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সদস্য হয়ে কিভাবে এই দুর্নীতি করতে পারেন? – এটি প্রশ্ন সাধারণ জনগণের। দেবজ্যোতি দাবি করেন, চাকরি হয়েছে তার বাম আমলে। কাজেই চাকরী সংক্রান্ত দুর্নীতির সাথে তার চাকরির কোন সম্পর্ক নেই।
পাসপোর্টে অষ্টম শ্রেণী পাশের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি জানান, কোথাও অষ্টম শ্রেণি পাসের কথা উল্লেখ করা নেই। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দেবজ্যোতি ঘোষকে বৃহস্পতিবার বিশেষ তলব করেন এবং সঙ্গে উপস্থিত থাকতে বলেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারকেও।