digha jagannath mandir, digha,, digha jagannath temple
খুশির খবর, আগামী বছর বড়দিনের আগেই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে দীঘার জগন্নাথ ধাম | ছবি - সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সব ঋতুতেই বাঙালির প্রিয় উইকেন্ড ডেস্টিনেশন দীঘা। বর্তমানে দিঘা দুটি অংশে বিভক্ত। একটি নিউ দীঘা এবং অন্যটি ওল্ড দীঘা। তবে সমুদ্রের ভাঙ্গনের ফলে দীঘার বিচ দুটি সমুদ্র গ্রাস করে নেওয়াতে দীঘার আশেপাশে শংকরপুর, তাজপুর, মন্দারমনির মতো সমুদ্র সৈকতগুলো পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তবুও দীঘার জনপ্রিয়তাতেও একটুও ভাটা পড়েনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও দীঘাকে আরো সুন্দর করে সাজিয়ে এবং পর্যটকদের কাছে মনোরম করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ।

সেই প্রকল্পগুলির মধ্যে যেমন আছে দীঘা মেরিন রোড, ঢেউসাগর বিনোদন উদ্যান, একইুরিয়াম ইত্যাদি। তার সাথে এবার দীঘার মুকুটে আরো একটি পালক যুক্ত হতে যাচ্ছে। এবার দীঘাতেও পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে জগন্নাথ মন্দির। দীঘা শহরের সৌন্দর্যায়ন ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছে আকর্ষণ বাড়াতে এই সুন্দর পদক্ষেপটি গ্রহণ করা হয়েছে।

দীঘা আগে থেকেই সমুদ্র সৈকত হিসেবে পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি পর্যটনস্থল। তবে তার সাথে সাথে দীঘাকে ধর্মীয় পর্যটনের স্থান হিসাবে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বছরেরই মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি ওড়িষ্যার পুরীর মন্দিরের আদলে জগন্নাথ ধাম তৈরি করার ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই কাজে কতটা গতি এসেছে, কবে থেকে পর্যটকদের জন্য এই মন্দির খুলে দেওয়া হবে, তা নিয়ে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন।

তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ এর বড়দিনের আগেই মন্দির নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হবে এবং পশ্চিমবঙ্গের এই নতুন জগন্নাথ ধাম পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া যাবে। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের কাছে হাতে আছে আর মাত্র একটি বছর। আশা করা হচ্ছে আগামী দিনে দীঘার পর্যটনের এক অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে এই পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দির। মন্দিরটি তৈরি হচ্ছে নিউ দীঘা স্টেশনের কাছে ভগীব্রহ্মপুর মৌজাতে।

মন্দিরের ডিজাইন থেকে শুরু করে মন্দিরের উচ্চতা, সবই হবে আসল পুরী মন্দিরের সমান। অর্থাৎ এই মন্দিরের উচ্চতাও হতে যাচ্ছে প্রায় ৬৫ মিটার। শোনা যাচ্ছে মন্দিরের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। মন্দিরটির তৈরি করছে হিডকো। সময় মত কাজ শেষ হলে আগামী বছর ২৫ শে ডিসেম্বর আসার আগেই পর্যটকদের জন্য এই জগন্নাথ মন্দির খুলে দেওয়া যাবে। তবে নতুন জগন্নাথ মন্দির পুরীর মন্দিরের বিকল্প হতে পারবে কিনা তা নিয়ে এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের মধ্যেই রয়েছে সন্দেহ।

দীঘায় ঘুরতে আসা এক পর্যটক যেমন বলেছেন, “ছোট থেকে দীঘায় ঘুরতে আসি। এখনকার দীঘাকে অনেক বেশি কমার্শিয়াল মনে হয়। এখানে জগন্নাথ মন্দির হবে শুনেছি। কিন্তু পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ভক্তি এখানে থাকবে না। তবে মন্দির হলে ঘোরার আরও একটা জায়গা হবে। সেটা ভালই হবে।” অন্যদিকে কোন কোন পর্যটককে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করতেও দেখা গিয়েছে। একজন যেমন বলেছেন, “পুরী ধামের মাহাত্য কোনও দিনই দীঘায় তৈরি হবে না। জগন্নাথ মন্দির বলে লোকে পুরী বোঝে। সেই জায়গা দীঘা নিতে পারবে না। অন্য আর এক পর্যটকের বক্তব্য হল, “ঠাকুরের মন্দির অবশ্যই পূজনীয়, যেখানেই তা হোক। তবে পুরীর ও দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের কোনও তুলনা হয়। এ বিষয়ে প্রতিযোগিতাও নেই। পুরীর সঙ্গে আবেগ অনেক বেশি।”