পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ গতকাল অর্থাৎ সোমবার বিকেলে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির আরও ৫০ জন বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বৈঠকের পরের দিনই আজ দিল্লি সফরে যাচ্ছেন রাজ্যপাল।
গতকাল দলবদলু নেতাদেরকে কেন্দ্র করে একাধিক ইস্যু নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিরোধী দল নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এই সাক্ষাৎকারের পর আজ দিল্লি সফরে রাজ্যপাল এবং তিনি রাজ্যে ফিরবেন আগামী ১৮ জুন অর্থাৎ আগামী শুক্রবার। রাজ্যপালের এই চারদিনের দিল্লি সফর তাৎপর্যপূর্ণ তা বলাই বাহুল্য।
মুকুল রায় তৃণমূলে ফেরার পর থেকেই সরগম রাজ্য রাজনীতি। দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করা নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন বিজেপি বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার বিকালে রাজ্যপালের সঙ্গে দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকার সারেন শুভেন্দু বাবু। এছাড়াও রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়েও নানান কথাবার্তা তুলে ধরেন তিনি।
Hon’ble Governor West Bengal. Shri Jagdeep Dhankhar will be visiting New Delhi.
Governor Dhankhar will leave for Delhi on the late evening of June 15, 2021 and return to Kolkata on June 18, 2021 in the late afternoon.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 15, 2021
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়-এর দিল্লি সফর এই প্রথম নয়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই তিনি দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। দেখা করার পাশাপাশি তিনি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। সেই সময় বঙ্গে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা নিয়ে সুর বাজিয়ে ছিলেন তিনি। তবে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা নিয়ে নর্থ ব্লক জানিয়েছিল, এভাবে মুখে মুখে হয়না। ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ এর একটা প্রক্রিয়া আছে।
তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা নিয়ে সোচ্চার হন দুই বিজেপি নেতা। ব্যারাকপুরের বিজেপি সংসদ অর্জুন সিং বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারকে বলছি আইন অনুযায়ী ৩৫৬ ধারা জারি করুন।” অন্যদিকে দিন কয়েক আগেই নন্দীগ্রামের বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “৩৫৬ ধারা যেসব কারণে লাগু করা হয় তার থেকেও খারাপ অবস্থা বাংলার।” ৩৫৬ ধারা লাগু নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে।

রাজ্যপাল দিল্লি সফরে যাচ্ছেন একথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে টুইট করে দিল্লি সফরের কথা জানিয়েছেন তিনি। তার এই দিল্লি সফর কোন ভিত্তিতে তা এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড় এর এই দিল্লি সফরকে ঘিরেই ইতিমধ্যে কানাঘুষা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
জানিয়ে রাখি, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক প্রথম থেকেই মধুর নয়। রাজ্য সরকারকে একাধিকবার নিশানায় নিয়েছেন রাজ্যপাল। ভোট-পরবর্তী হিংসা খতিয়ে দেখার পর রাজ্য সরকারকে দূষে ছিলেন রাজ্যপাল। সে সময় তিনি রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ জানিয়ে বলেন, “ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় অশান্তি হয়েছে। সেই সমস্ত জায়গাগুলিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন গেলেন না।” এছাড়াও তিনি বলেন, “বাংলায় যেভাবে নির্মম হিংসা চলছে, তা পৃথিবীর আর কোন প্রান্তে হয় না।”