পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ আজ বিধানসভা অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এর ভাষণ দিয়ে। সেই কথা মতোই তিনি সঠিক সময়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিধানসভায়। তবে অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যপাল।
যার কারণে ভাষণ না দিয়েই বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড়। রাজ্যপাল জাগদীপ ধনখড় বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে দুপুর ২ঃ০৪ মিনিটে ভাষণ পাঠ শুরু করেন। ভাষণ পাঠের শুরুতেই বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বিধানসভার ওয়েলে নেমে এসে তুমুল হট্টগোল পরিস্থিতি তৈরি করে বিজেপি বিধায়করা।
এরপর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়-এর কথামতো কিছুটা শান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তারপর রাজ্যপাল ফের ভাষণ পাঠ করেন। তবে ভাষণ পাঠ করতে না করতেই ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি বিধায়করা। বাধাপ্রাপ্তির ফলে দুপুর ২ঃ০৮ মিনিটে রাজ্যপাল ভাষন সম্পূর্ণ না করেই বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।
আরও পড়ুনঃ “রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি”, দুই মাস পেরোতে না পেরোতেই তৃণমূল বিধায়কের ভোলবদল
তবে কেন বিজেপি বিধায়করা রাজ্যপাল-কে ভাষণ পাঠ করতে বাধা দিয়েছিলেন? এ বিষয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী দল নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। আজ তিনি জানিয়েছেন, “রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় যে ভাষণ পাঠ করেছিলেন সেটি রাজ্য সরকারের লেখা ভাষণ। রাজ্য সরকারের লেখা হয়ে ভাষণে কোন সততায় ছিল না। এমনকি ভোট-পরবর্তী হিংসার কথা উল্লেখ করা হয়নি ওই ভাষণে।”
জানিয়ে রাখি, একুশের বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হতেই, ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছিল বিজেপি। তবে এবার বিধানসভা-তেও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে ছাড়েননি বিজেপি বিধায়করা। ভোট-পরবর্তী হিংসাকে কেন্দ্র করেই তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে গেরুয়া শিবির।
এই বিক্ষোভ-কে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ভোট-পরবর্তী হিংসার কথা উল্লেখ ছিল না রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এর ওই ভাষণে। তৃণমূলের গুন্ডা ও নিষ্ক্রিয় পুলিশের কোনো ভূমিকায় উল্লেখ নেই তাতে। সেই কারণে আমরা বাধা দিয়েছি।” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “যদি ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একটি লাইন ওই ভাষণে থাকতো বা লেখা হতো। এছাড়াও অন্তত তদন্ত করার কথা ও যদি উল্লেখ থাকতো, তাহলে আমরা দায়িত্বশীল বিরোধীর ভূমিকা পালন করতাম।”
আরও পড়ুনঃ প্রবল বৃষ্টির কারণে এই কয়টি জেলায় লাল সর্তকতা জারি করল আবহাওয়া দপ্তর
শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, ভোট-পরবর্তী হিংসার কারণে প্রায় নয় হাজার এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সাড়ে সাত হাজারের বেশি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি রাজ্য সরকার। এছাড়াও তিনি বলেন, ভোট-পরবর্তী হিংসার কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪১ জনের। এছাড়াও ভোট পরবর্তী হিংসার কারনে অত্যাচারিত হয়েছেন মহিলারাও। এইসব বিষয়ে যদি কোন কথা উল্লেখ থাকতো ওই ভাষণে, তাহলে হয়ত আমরা বিক্ষোভ দেখাতাম না। তবে রাজ্যপাল কেন কোনও বক্তব্য না রেখেই বিধানসভা ছেড়ে চলে গেলেন সে বিষয়ে কোনও কথা বলেননি শুভেন্দু আধিকারী।