পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ নারদা কাণ্ডের জেরে গত সোমবার কলকাতার হেভিওয়েট নেতাকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই। তবে নিম্ন আদালতের রায়ে জামিন পেলেও, কলকাতা হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়।
জামিন স্থগিত হওয়ায়, ওই চার হেভিওয়েট নেতা তথা ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় মদন মিত্র ও সুমন চট্টোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর জেলের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়। যার ফলে তাদেরকে এসএসকেএম হাসপাতালে উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তবে এদিন নারদা কান্ডের মামলার শুনানিতে ওই চার নেতা জামিন না পেলেও গৃহবন্দি থাকার আদেশ পেয়েছেন। হাইকোর্টের রায় জানার পর শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আর হাসপাতাল রাখতে চান না বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এর অভিযোগ, শোভন চট্টোপাধ্যায় কে শুধু শুধু হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে। ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছে না তার। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, “শোভন চট্টোপাধ্যায় যে অসুস্থতায় ভুগছেন, সেটি ৩-৪ বছর আগেকার। নতুন করে তার শরীরে আর কোন রোগ নেই। তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় এই অসুখের মেডিসিন গুলি বাড়িতে বসে খাচ্ছিলেন।”
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এর অভিযোগ, “যে মেডিসিন গুলো তিনি বাড়িতে বসেই খাচ্ছিলেন সেই ওষুধগুলি হাসপাতাল থেকেই খাওয়ানো হচ্ছে। তাহলে তাকে বাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন ? শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তো কোনো রকম অপারেশন করা হয়নি ? শুধু ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা চলছে। তাহলে তাকে কেন হাসপাতালে একটা রুমে তাকে রাখা হবে ? প্রশ্ন করেন তিনি। এছাড়াও তিনি বলেন, “কোনরকম অপারেশন বা টেস্ট না করিয়েই বলে দিলেন শোভনের সিরোসিস লিভার রয়েছে ? তবে হাসপাতলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তো কোনো রকম টেস্ট করা হয়নি। তাহলে কিভাবে শোভনের সিরোসিস লিভার ধরা পরল?” প্রশ্ন করেন তিনি।
এছাড়াও বৈশাখী বলেন, “ডায়াবেটিস থাকার কারণে শোভন অস্থির হয়ে পড়েছে। আবার এদিকে মহামারী করোনার ভয়ও রয়েছে। উনি এখন সুস্থ আছেন, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ না ছাড়ায় শোভন আরও বেশি অসুস্থ বোধ করছে। উনি হাউস অ্যারেস্ট থাকুক, কিন্তু শোভনকে বাইরে এনে চিকিৎসা করতে চাই। তবে আবার বলা হচ্ছে ওকে আমার সঙ্গে যেতে দেওয়া হবে না। তবে হাইকোর্ট বাড়ি যেতে বলেছে। কিন্তু কোন বাড়ি সেটা তো নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।”
বৈশাখীর এমন মন্তব্যের জেরে তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, “জেলে থাকাকালীন অবস্থায় অসুস্থ থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর এখন বলছে সে সম্পূর্ণ সুস্থ। একজন মহিলার কথায় তো আর সব হবে না। হাসপাতালে কিছু নিয়ম আছে, তা মেনেই সব হবে।” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালে কি মধুচক্রের আসর বসানো হয়েছে? উনি হাসপাতালে গিয়ে এঘরে ওঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।”
কুনাল ঘোষ এর জবাবে পাল্টা জবাব দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈশাখী বলেন, “তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী তথা মদন মিত্র ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলাটাও কি মধুচক্র চালানো ? যদি তাই হয়, তাহলে বলব এনারাও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।”
তবে কুনাল ঘোষের এমন মন্তব্যের জেরে ‘মুখ পোড়া হনুমান’ বলে কটাক্ষ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আমাকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতিতে যিনি বৈশাখী কে আক্রমণ করেছেন তার উদ্দেশ্যে আমি বলবো, এসব কথা আপনার মুখে মানায় না। আপনার নিজের দিকটাও একটু দেখবেন। উনি নিজের মুখ নিজেই পুড়িয়েছেন, মুখ পোড়া হনুমান একটা।”