পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ রাজধানী দিল্লিতে ঘটে যাওয়া খুনের ঘটনার পর উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, মুম্বাইয়ের এক কল সেন্টারে কাজ করতেন শ্রদ্ধা। সেখান থেকেই আলাপ হয় আফতাব আমিন পুনাওয়ালাকের সঙ্গে। আফতাব পেশায় ছিলেন একজন স্বীকৃত সেফ। পরিবারের অমতে সম্পর্ক ছিল তাদের। প্রেমিক আফতাবের হাত ধরে দিল্লিতে এসে লিভ ইন -এ থাকতে শুরু করেন শ্রদ্ধা। তবে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হত তাদের মধ্যে। কিন্তু এই ঝগড়ার পরিনাম এত ভয়ঙ্কর হতে পারে এটি স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি শ্রদ্ধা ওয়ালকার। ঝগড়ার পরিমাণ এতটাই চরম পর্যায়ে পৌছে গেছিল যে শেষমেশ খুন হতে হলো শ্রদ্ধাকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ই মে আফতাব তার লিভ-ইন পাটনার শ্রদ্ধা ওয়ালকারকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরদিন অর্থাৎ ১৯ তারিখ সকালে পাশের একটি বাজারে গিয়ে ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজ কিনে আনেন। ফ্রিজের ২৩,৫০০ টাকা বিল মেটাতে সে ব্যবহার করেছিল তার ক্রেডিট কার্ড। ফ্রিজ কেনার পর আফতাব ছুরি-কাঁচির দোকানে যায় এবং সেখান থেকে ছুরি ও বেশ কিছু প্লাস্টিকের ব্যাগ কিনে নিয়ে আসে। নভেম্বরের ১২ তারিখে শ্রদ্ধা ওয়ালকারের খুনের ঘটনায় আফতাব পুনাওয়ালাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। স্বীকারোক্তিতে জানা গিয়েছে, তিনি যে ফ্রিজটি কিনেছিলেন ওই ফ্রিজের মধ্যে শ্রদ্ধার দেহাংশ টুকরো টুকরো করে রাখা হয়েছিল। এরপর বেশ কিছুদিন ফ্রিজের মধ্যে শ্রদ্ধার দেহাবশেষ রাখার পর প্রতিদিন রাতে একটি করে টুকরো দিল্লির জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসত অভিযুক্ত।
আফতাবকে জেরা করতে করতে পুলিশের হাতে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে। সূত্রের খবর, একটি ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে শ্রদ্ধার মৃত দেহকে ৩৫ টুকরো করে অভিযুক্ত আফতাব। দেহ টুকরো টুকরো করে কাটতে ছোট করাত ব্যবহার করেছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে ওই করাত এখনো পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি তদন্তকারী দল।
অভিযুক্তকে জেরা করে আরও জানা যায়, শ্রদ্ধার দেহাংশ খণ্ড খণ্ড করে সে দিল্লির মেহরৌলির জঙ্গলে ফেলেছিল। গত সোমবার দিল্লি পুলিশ শ্রদ্ধার দেহাংশ সংগ্রহ করতে আফতাবকে মেহরৌলির জঙ্গলে নিয়ে যায়। জানা গিয়েছে, এখনো পর্যন্ত ১০ টি টুকরো উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ। বাকি ২৫ টি টুকরো উদ্ধার করতে এখনো অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে এই ১০টি টুকরো শ্রদ্ধার কিনা জানতে, টুকরোগুলিকে ফরেনসিক ও ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।