পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ এবার স্কুলের ভেতরে এক ন্যাক্কার জনক ঘটনার সম্মুখীন হল বাংলা। ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার স্কুলের মধ্যেই গণধর্ষণ (gang rape) করার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে মালদার গাজোল থানার অন্তর্গত একটি জুনিয়র হাইস্কুলে। ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে রবিবার রাতেই তিন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজোলের ওই জুনিয়র স্কুলের মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন, তবে তিনি শনিবার স্কুলে আসেননি। কিন্তু স্কুল খোলা থাকায় কয়েকজন পড়ুয়া স্কুলে উপস্থিত হয়েছিল। তাদের মধ্যে এই মেয়েটিও ছিল। যথারীতি অন্যদিনের মতো মিড ডে মিলের রান্না হয়। দুপুরে মেয়েটি দুপুরের মিড ডে মিল খাওয়ার পরে তার এক বান্ধবীর সাথে স্কুলের দোতালার ঘরে খেলা করছিল। সেই সময় অভিযুক্ত তিন যুবক স্কুলে ঢুকে বাচ্চা মেয়ে দুইটির সঙ্গে দোতলার ওই ঘরে বসে গল্প শুরু করে।
নির্যাতিতা মেয়েটির বান্ধবী জানিয়েছে, যুবক তিনটি গল্পের ছলে তাদের গায়ে হাত দিচ্ছিল। সে তাতে ভয় পেয়ে ছুটে বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। মেয়েটির কথা শুনে অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে দেখে অন্য মেয়েটি বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে, কান্নাকাটি করছে। মেয়েটি বাড়ি ফিরে এসে বাড়ির লোকজনকে জানায় যে ওই তিন যুবক তার উপর অত্যাচার চালিয়েছে। অভিযুক্ত যুবকদের মধ্যে একজনের বোন ওই স্কুলেরই পড়ুয়া।
রবিবার গাজোল থানায় ওই তিন যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা নাবালিকার মা। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মূল অভিযুক্ত মনোজ মাল এবং তার সঙ্গের দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতা নাবালিকাকে মালদা মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রাথমিক রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। অভিযুক্তদের সোমবার জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাদের চারদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্যাতিতার মা প্রশ্ন তুলেছেন যে, তাহলে কি এখন শিশুরা স্কুলেও নিরাপদ নয়? স্কুলে পড়াশোনা করতে গিয়ে যদি এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় তবে তা চরম লজ্জার। তিনি আরো জানিয়েছেন, স্কুলটিতে শিক্ষক বলতে মাত্র একজনই। ঘটনার দিন তিনি স্কুলে আসেননি। তার উপর স্কুলে অন্য কোনও অশিক্ষক কর্মচারী পর্যন্ত নেই। বাইরে থেকে একজন রাঁধুনী এসে মিড-ডে মিলের রান্না করে দিয়ে যান। যখন তখন বহিরাগত যে কেউ স্কুলে ঢুকে পড়ে। এই ভাবেই বছরের পর বছর ধরে একটা প্রাইমারি স্কুল চলে আসছে।