Maha Shivratri, festival, মহা শিবরাত্রি, উৎসব
মহা শিবরাত্রির দিনক্ষণ এবং চতুর্দশীর ৪ প্রহরের শুভ যোগ! জানুন আরাধনার নিয়মাবলী এবং নিষেধাজ্ঞা

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ মহা শিবরাত্রি (ফাল্গুনের চতুর্দশীতে কৃষ্ণপক্ষে) অর্থাৎ দেবাদিদেব মহাদেব এবং মাতা পার্বতীর বিবাহ বন্ধনের দিন। এই দিনটিতে ভক্তিভরে সমস্ত বিধি মেনে পূজা আরাধনা করতে পারলে পূরণ হয় সকল মনস্কামনা। মহাদেব যার আরেক নাম “ভোলানাথ” শীঘ্র তুষ্ট হন বলে এনাকে ভোলানাথ বলা হয়। তিনি যেমন শীঘ্র তুষ্ট হন তেমন শীঘ্র রুষ্টও হন। তাই কিছু বিধি-নিষেধ অবশ্যই মেনে এই পুজো করা উচিত। দেখে নিন ভোলানাথের পূজার সঠিক নিয়মনীতি –

ইংরেজির ১৮ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ও বাংলার ৫ই ফাল্গুন ১৪২৯ শনিবার রাত্রি ৮:০৩ ঘটিকায় শিবচতুর্দশী শুভারম্ভ এবং আগামীদিন ১৯শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বিকাল ৪:১৮-তে মহা সমাপ্তি।

অমৃতযোগঃ

শাস্ত্রে কথিত আছে অমৃতযোগ চলাকালীন লিঙ্গাভিষেক শুভ ফলপ্রদ! এ সময় লিঙ্গাভিষেক করলে পুত্র সন্তান প্রাপ্তি হয়, শুভ কাজে আসা সমস্ত বিঘ্ন কেটে যায়, যেমন- বিবাহ, নতুন কোনো কাজ আরম্ভ ইত্যাদি।

অমৃতযোগ-গুলি নিম্নেলিখিত হইল-
রাত্রি  ০৮:৪৬-১১:১৮ (১৮ তাং)
রাত্রি  ০১:০০-০২:৪২ (১৯ তাং)
ভোর  ০৩:৩৩-০৫:১৫ (১৯ তাং)
সকাল  ০৭:৪২-১০:৪২ (১৯ তাং)

বিধিঃ

সংযমঃ শিবরাত্রির আগের দিন “সংযম” থাকতে হয়, অর্থাৎ নিরামিষ ও হালকা খাদ্য গ্রহণ করতে হয়, সকল ধরনের পার্থিব সুখ থেকে বিরত থাকতে হয়। কেবলমাত্র এক বেলা অন্ন গ্রহন করা যায়।

স্নানঃ শিবরাত্রির দিন কালো তিল ভেজানো জলে সূর্যোদয়ের পূর্বে স্নান করতে হবে, এই মন্ত্রটি পাঠ করে- “ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টি বর্দ্ধনম্। উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোমুক্ষীয় মামৃতাৎ।।” স্নান সেরে পরিষ্কার পোশাক পরতে হবে।

উপবাসঃ স্নানের পর সারাদিন উপোস করে থাকতে হবে, তবে ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী তরল জাতীয় কিছু পান করা যেতে পারে ভোলানাথের মাথায় জল ঢালার আগে! তবে অনেকে নির্জলা উপোষ করে থাকেন। সারাদিন এই মন্ত্রটি পাঠ করে যেতে হবে “ওঁ নমঃ শিবায়”।

প্রহরঃ এই পূজাটি চারটি প্রহরে হয়, এবছরের প্রহরের সময়গুলি হল –

প্রথম প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৫টা ৩৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা ৪২ মিনিট। “দুগ্ধ দ্বারা অভিষেক করাইতে হইবে…”

দ্বিতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ৮টা ৪২ মিনিট থেকে রাত ১১টা ৫০ মিনিট। “দধি দ্বারা অভিষেক করাইতে হইবে…”

তৃতীয় প্রহরের পূজা – ১৮ ফেব্রুয়ারি, রাত ১১টা ৫০ মিনিট থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত ২টা ৫৮ মিনিট। “ঘৃত দ্বারা অভিষেক করাইতে হইবে…”

চতুর্থ প্রহরের পূজা – ১৯ ফেব্রুয়ারি, রাত ২টা ৫৮ মিনিট থেকে সকাল ৬টা ০৬ মিনিট। “মধু দ্বারা অভিষেক করাইতে হইবে…”

যেগুলো ব্যবহার করা যাবেঃ

দুধ, দই, ঘি, মধু, সাদা-চন্দন, বেলপাতা, আকন্দ, ধুতুরা, অখণ্ড চাল, ভাঙ, সাদা ফুল, অপরাজিতা ফুল, মরশুমি ফল এবং বেল, প্রদীপ, কর্পূর, মিষ্টান্ন ইত্যাদি।

যেগুলো ব্যবহার করা যাবে নাঃ

১)অভিষেকের জন্য স্টিল, তামা, লোহার পাত্র ব্যবহার করা যাবে না।
২)হলুদ, সিঁদুর, কুমকুম ব্যবহার করা যাবে না।
৩)তুলসী পাতা ব্যবহার করা যাবে না।
৪)ভাঙা চাল ব্যবহার করা যাবে না।
৫)শঙ্খ থেকে জল অর্পণ করা যাবে না।
৬)শঙ্খ বাজানো যাবে না।
৭)করতাল বাজানো যাবে না।
৮)উগ্র সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে না।
৯)ডাব বা নারকেলের জল ব্যবহার করা যাবে না।

উপবাস ভঙ্গঃ পূজা কার্যাদি পরিপূর্ণ করার পর ব্রাহ্মণের বিধান অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ করে উপোস ভঙ্গ করা যাবে।

সমগ্র নিয়ম সঠিকভাবে পালন করে পূজার কাজ করতে পারলে আপনার সমস্ত মনোবাসনা পূর্ণ হবে এবং আপনি মহাদেবের আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন।