পশ্চিমবঙ্গের ডিজিটাল ডেস্কঃ বুধবার রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই অনুষ্ঠানে প্রথম সারির আসনে জায়গা পাননি বিজেপি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফলে অনুষ্ঠান বয়কট করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব। ঠিক এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী দলনেতাকে বিধানসভার ভবনে ডেকে নিয়ে চা খাওয়ালেন।
কিন্তু বস্তুত যে চা খেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেকেছিলেন সময়ের অভাবে সেই চা-টাই খাননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে গত কয়েক মাসের নিরিখে এই দু-জনের রাজনৈতিক সম্পর্ক যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এই সাক্ষাৎকার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও কেনই বা মুখ্যমন্ত্রী ডাকলেন, কেনই বা শুভেন্দু অধিকারী গেলেন, যাওয়ার পর তাদের মধ্যে কি কথা হয়েছে, তা নিয়ে দু-পক্ষের কেউই খোলসা করে কিছু জানাননি।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি দলনেতার মিনিট চারেকের এই সৌজন্য সাক্ষাতের কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, তাকে চা খেতে ডেকেছিলাম। আর শুভেন্দু অধিকারী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সৌজন্য থাকবে। সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে গিয়েছিলাম। তবে কী আলোচনা হয়েছে বলব না। সংসদীয় গণতন্ত্রে সেটা উচিত নয়।
তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শাসক ও বিরোধী শিবিরের মুখ্য দুই নেতা-নেত্রীর এই হঠাৎ সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে বিভিন্ন মহলের বিভিন্ন তথ্য এবং ব্যাখ্যা সামনে আসছে। যদিও তার কোনোটিই এখন অবধি আনুষ্ঠানিক মান্যতা পায়নি। ওয়াকিবহল মহলের কারো কারো বক্তব্য এই সৌজন্য সাক্ষাতের নিমন্ত্রণ আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মাস্টার স্টোক। যার দ্বারা বিরোধী দলনেতার মনে তৈরি হওয়া ক্ষোভের বাষ্প বার করে দিলেন।
অন্য ধারে রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসন বন্টন নিয়ে তৈরি হওয়া বিজেপির অন্দরের ক্ষোভের উপর প্রলেপ দিলেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, বর্তমান রাজ্য রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাপেক্ষে একটু নমনীয় হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও কেউ কেউ এর মধ্যে আবার কেন্দ্র রাজ্য পারস্পরিক সম্পর্কের হিসেব-নিকেশ দেখতে পাচ্ছেন।
আগামী ৫ই ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী বৈঠক নির্ধারিত হয়ে রয়েছে। তার আগে রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে প্রধানমন্ত্রীর মনোক্ষুন্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রাজ্যেভবনে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় রাজ্যপাল নিজেও বেশ বিব্রত হতে পারেন।