ইয়াস, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত শাহ
ছবি - সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- করোনার সাথে খুব শীঘ্রই ‘ইয়াস’ নামের দুর্যোগের মুখে পড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গসহ আরো দুই রাজ্য। এই বিপর্যয়ের হাত থেকে মানুষকে কিভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, সে বিষয় নিয়েই আজ এই রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে বৈঠকে বসতে চলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকেননি।

প্রধানত ভারতবর্ষের পূর্ব উপকূলবর্তী তিনটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ এই বিপর্যযয়ে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। কিভাবে এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের সুরক্ষিত করা যায় এই বিষয়ে আলোচনার জন্য আজ এই বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির স্থানে রাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

এছাড়াও ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই বৈঠকে। বৈঠকটি বেলা ১১টার সময়ে সম্পূর্ণভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে। মূলত এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য বিভিন্নভাবে সচেতনতামুলক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যস্ত মমতা ব্যানার্জি। সেই জন্যই তার স্থানে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।

নবান্নে ২৫ এবং ২৬ শে মে তারিখে কন্ট্রোল রুমে সর্বক্ষণ চোখ রাখবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। বর্তমানে মানুষদের সচেতনতার সূত্রে ঝড়ের বিষয়ে বিভিন্ন বার্তা প্রদান করেছেন তিনি। কেন্দ্র থেকে মূলত এই বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির অনুপস্থিতিকে অনেকেই এড়িয়ে যাওয়া বলে মনে করছেন।

গতবার আমফানের সময় প্রচুর মানুষকে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। কাজেই এইবারও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের এলাকাগুলি থেকে করোনার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণকে স্থানান্তরিত করার চেষ্টা চলছে। সেইসব মানুষদের জন্য পানীয় জল, খাবার, ওষুধ, শৌচালয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে রাজ্য।

রাজ্য সরকারের মতে, পরিস্থিতি হাতের নাগালের মধ্যে থাকলে দ্রুতই বিদ্যুৎ সংযোগ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যোগান স্বাভাবিক করে দেওয়া হবে। আজ সকাল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী অঞ্চলেগুলিতে আবহাওয়ার পরিবর্তন চোখে পড়েছে সকলের। কাজেই সেখানের পরিস্থিতি যাতে ঠিকঠাক থাকে সেদিকে নজর দিচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি।

রবিবার কেন্দ্র চিঠির মাধ্যমে রাজ্যকে সকল মৎস্যজীবীদের সচেতন করে দেওয়ার বার্তা পাঠিয়েছেন। রামনগর ও কাথি এলাকায় কিছু মাছ ধরার নৌকা গভীর সমুদ্রে ঘোরাফেরা করছিল বলে দাবি। তাদের ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দেয় কেন্দ্র।

রাজ্য দুই ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাগুলিতে সচেতনতার বার্তা প্রচার করা শুরু করে দিয়েছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলেগুলির বাসিন্দাদের নিয়ে বাঁধ সারানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই স্যাটেলাইট ফোনের ব্যবহারের প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হয়েছে। যাতে থানার পুলিশকর্মীরা শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি রাজ্যকে জানাতে পারে।

হাসপাতালগুলিতে ঝড়ের ফলে দীর্ঘক্ষন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার ফলে করোনা রোগীদের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। সেই জন্য যেসমস্ত হাসপাতলে জেনারেটরের ব্যবস্থা নেই, সেখানে ভাড়া করা জেনারেটর এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন হেলিকপ্টারে করে গঙ্গাসাগর, গোসাবা, জি-প্লট এবং বকখালি সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।