পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ ভোট আবহের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে বেড়ে চলেছে অতিমারি করোনা। লাগামহীন করোনা পরিস্থিতিতে মাদ্রাজ হাইকোর্টের চরম ভর্ৎসনার মুখে নির্বাচন কমিশন।
করোনার প্রকোপ বাড়ায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “লাগামহীন করোনা পরিস্থিতির জন্য একমাত্র নির্বাচন কমিশনই দায়ী।” এমনকি তিনি বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত।”
নির্বাচন কমিশনকে এক হাতে নিয়ে মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজকে দেশের এই পরিস্থিতি হয়েছে, তার জন্য একমাত্র নির্বাচন কমিশন দায়ী। নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা কোনো ক্ষমতাই প্রয়োগ করেনি। করোনা ভাইরাস এর জন্য বারবার আদালত নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করেছে। কিন্তু তার পরেও কোভিড বিধি ভেঙে সভা ও মিছিল করার জন্য কোন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন পদক্ষেপ নেয়নি।”
এখানেই থেমে থাকেননি মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। নির্বাচন কমিশনের অফিসারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, “ভোট প্রচার চলছিল যখন, তখন আপনারা কি অন্য গ্রহে ছিলেন? আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও কভিড প্রটোকল নিশ্চিত করতে পারেনি কমিশন। ভোট গণনার দিন কোভিড প্রটোকল মানা নিয়ে কি ভাবছে কমিশন?”
এর পরে তিনি আরো জানান, “ভোট গণনা নিয়ে ৩০ শে এপ্রিল-এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানাতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সঠিক পদক্ষেপ না নিলে ২’রা মে ভোট গণনা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতার মাশুল এই রাজ্যকে আর না দিতে হয়।” তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “দেশজুড়ে এমন পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুচি হওয়া উচিত।”
মাদ্রাজ হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, “জনস্বাস্থ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এই বিষয়টিকে একটি সাংবিধানিক সংস্থাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হচ্ছে এটা আক্ষেপের বিষয়। কেউ বেঁচে থাকলে তবেই তো গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতে পারবেন। এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বেঁচে থাকা এবং সুরক্ষিত থাকা।”
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই মতাদর্শকে সম্মোধন জানিয়েছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “বিজেপির কথাতেই চলছে নির্বাচন কমিশন। শেষ দফার ভোট একসঙ্গে করানোর জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করেছি আমরা। কিন্তু আমাদের কোনো কথাই গ্রহণ করেননি নির্বাচন কমিশন। তাই মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই নির্দেশ কে স্বাগত জানাচ্ছি।”
এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, “আদালত পরিষ্কারভাবে বলেছে কমিশন কখনো দায়িত্ব এড়াতে পারে না। কেরাল, তামিলনাড়ুতে এক দফায় ভোট হচ্ছে, আসামে দুই দফায় ভোট হচ্ছে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গে কেন ৮ দফায় ভোট করা হচ্ছে? মানুষকে মেরে ফেলার জন্য? বিজেপি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। তৃতীয় দফার ভোটের সময় কোভিড সংক্রান্ত পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে, সেটা আগেই বোঝা গিয়েছিল। কমিশন কে চিঠি লিখে জানিয়ে ছিলাম দফা কমিয়ে ভোট করাবার জন্য, কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে নির্বাচন কমিশন।”