পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ রামপুরহাট বগটুই এলাকার গণহত্যা কান্ডের তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিবিআই এর হাতে। গত শনিবার রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখতে আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। তবে সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ার পর যা তথ্য সামনে উঠে আসছে, যা রাজ্যের শাসক দলের উপর ভারী হতে চলেছে।
রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের গঠন করা স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমের উপর তাদের আস্থা নেই। যার ফলে এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। তবে রামপুরহাট হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্ত যতই এগোচ্ছে ততোই কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে কেউটে।
রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসলো তৃণমূলের পৌরভোটের সন্ত্রাস এবং ভোটে কারচুপির ছবি। জানা গিয়েছে, রামপুরহাটের গনহত্যা কাণ্ডে রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে, পৌরভোটে শাসকদলের বুথ দখল এবং ভোটে কারচুপি সহ সন্ত্রাসের ছবি তুলে ধরে এলাকাবাসী। জানা গিয়েছে, এইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ভাদু শেখ, আনারুল হোসেন, জহিরুল হোসেন ছাড়াও আরও অনেকে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী জানিয়েছে, রামপুরহাটের কিউবা নামের এলাকায় ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভিত শক্তপোক্ত করে রেখেছে সিপিআইএম। ওই ওয়ার্ডে কে কোন দলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন তা দেখে নয়, দলের প্রতীক চিহ্ন দেখেই ভোট হয়। ওই ওয়ার্ডে বাম প্রতীকে যে ব্যক্তিই ভোটে দাঁড়াবেন, তার জয় নিশ্চিত। কিন্তু সেই ওয়ার্ডেও সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের দায়িত্বে ছিলেন জহিরুল শেখ এবং আনারুল হোসেনের ঘনিষ্ঠ পান্থ দাস।
পৌরভোটের সময় তৃণমূল সন্ত্রাস চালিয়েছে তার একাধিক ছবি ও ভিডিও সিবিআই এর হাতে তুলে দিয়েছে এলাকাবাসী। ইতিমধ্যে পুরভোটের সিসিটিভি ফুটেজও সিবিআই এর হাতে এসে পৌঁছেছে। তবে প্রশ্ন উঠছে? কারা সন্ত্রাস করে, বুথ দখলের নির্দেশ দিয়েছিল? তবে এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে আরও বেশ কয়েকটি না উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য তথা পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান। এছাড়াও নাম জড়িয়েছে রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো সমু বন্দোপাধ্যায়ের।
তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, সমু পেশায় একজন আইনজীবী। গত সাত বছর ধরে রামপুরহাট মহকুমা আদালতে প্র্যাকটিস করছেন তিনি। কিন্তু তাঁর স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ দেখে অবাক হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। একজন সামান্য আইনজীবী হয়ে এত সম্পত্তির মালিক তিনি হলেন কিভাবে ? এখন সেই তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্তে রাজ্যের শাসকদলের যে আসল চেহারা বেরিয়ে আসছে তা বলাই বাহুল্য।