বিশ্বকাপ ফুটবলঃ– ফিফা বিশ্বকাপে পরপর দুটি ম্যাচে জয় পেল ব্রাজিল। সুইজারল্যান্ড এর বিরুদ্ধে ১-০ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নিল তরা। পাচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের হয়ে গোল করলেন ক্যাসেমিরো। একটি ম্যাচ বাকি থাকতেই রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর জন্য যোগ্যতা অর্জন করল সেলেকাওরা।
গোটা ম্যাচেই ডিফেন্সিভ মানসিকতা নিয়ে খেলতে নেমেছিল সুইজারল্যান্ড। ম্যাচের ৮৩ মিনিট পর্যন্ত তাতে সফল হয়েছিল তারা। নেইমার না থাকার কারণে মাঝমাঠ থেকে আক্রমণের ছন্দ কিছুটা হলেও হারিয়েছিল ব্রাজিলের। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না সুইজারল্যান্ডের। অবশেষে ক্যাসেমিরোর পা থেকেই ম্যাচের প্রথম এবং শেষ গোলটি তুলে নেয় ব্রাজিল। ডান পায়ে একটি দুর্দান্ত শটে গোল করে ব্রাজিলকে গ্রুপ শীর্ষে পৌঁছে দিলেন তিনি। একটি ম্যাচ বাকি থাকতেই রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর জন্য যোগ্যতা অর্জন করল তিতের ছেলেরা।
ম্যাচের প্রথমার্ধে থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করেছিল ব্রাজিল। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে কেন্দ্র করে আক্রমণ তুলে আনার চেষ্টা করছিল ব্রাজিল দল। রক্ষণভাগকে বেশ শক্ত করে ধরে রেখেছিল সুইজারল্যান্ড। ফলে আক্রমণ তুলে আনলেও গোলের মুখ খুলতে পারেনি ব্রাজিল। অন্য দিকে প্রতি-আক্রমণে খেলার পরিকল্পনা করে নেমেছিলেন সুইস কোচ মুরাত ইয়াকিন। বলের দখল নিজেদের কাছে রেখে এই আক্রমণের ঝড় তুলে আনছিল ব্রাজিল। মূলত বা প্রান্ত থেকেই সব আক্রমণ শুরু হচ্ছিল তাদের। ভিনিসিয়াস সুন্দরভাবে তার গতি ব্যবহার করছিলেন । তবে প্রতিপক্ষের অর্ধে ঢুকেই হারিয়ে ফেলছিলো সব আক্রমণ। ১৭ মিনিটের মাথায় পাকুয়েতার সুন্দর একটি ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি রিচারলিশন।
২৬ মিনিটের মাথায় আরো একটি গোলের সুযোগ নষ্ট করলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ক্রস বাড়ান রাফিনিয়া। কিন্তু বলটি জালে জড়াতে পারলেন না ভিনিসিয়াস। ৪ মিনিট পরে বক্সের বাইরে থেকে সোজাসুজি গোলরক্ষককে হাতে শট মারেন রাফিনিয়া।
৩০ মিনিট পরে খেলায় ফিরে আসতে শুরু করে সুইজারল্যান্ড। নিজেদের দখলে রেখে দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণ তুলে আনার চেষ্টা করে তারা। কিন্তু ব্রাজিলের অর্ধে সুইস খেলোয়াড়ের সংখ্যা কম হওয়ায় আক্রমণগুলো থেকে গোল তুলতে পারেননি তারা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে কর্নার থেকে সুযোগ তৈরি করে ব্রাজিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোল আসেনি। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দলে পরিবর্তন আনেন ব্রাজিলিয়ান কোচ তিতে। লুকাস পাকুয়েতাকে তুলে নিয়ে তরুণ খেলোয়াড় রদ্রিগোকে আনেন তিনি। আক্রমণে আরও গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে সেলেকাওরা। ৫২ মিনিটের মাথায় তাদের প্রথম আক্রমণ তুলে আনে সুইজারল্যান্ড। বাঁ দিক থেকে ডান দিকে ভারগাসের জন্য বল বাড়ান জাকা। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের কোন খেলোয়ার বল পাওয়ার আগেই বিপন্মুক্ত করেন ব্রাজিলের অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা।
৬৮ মিনিটের মাথায় সুইজারল্যান্ডের জালে বল জড়ান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। প্রথমে রেফারি সেটি গোল দিলেও পরে ভার প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে বাতিল করা হয় সেই গোল। আক্রমণ তুলে আনার সময় অফসাইডে ছিলেন রিচার্ডলিসন। সেই কারণে পরে সেই গোলটি বাতিল করা হয়। এরপর থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে ব্রাজিল দল। আক্রমণের উপর আক্রমণের ঝড় তুলে আনছিল তারা। অ্যান্টনি ও গ্যাব্রিয়েল জেসাসকে নামিয়ে আক্রমণের আরো গতি বাড়াতে চান তিতে। তবে অন্যদিকে মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল সুইজারল্যান্ড। কোন রকমের ফাটল আসতে দেয়নি রক্ষণভাগের। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। রদ্রিগোর পা থেকে প্রতিপক্ষের বক্সের ভেতর বল পান ক্যাসেমিরো। ডান পায়ে জোরালো শট নেন তিনি সুইজারল্যান্ডের খেলোয়াড়ের গায় লেগে সেই বল জড়িয়ে যায় জালে। কিছু করার ছিল না সুইজারল্যান্ড এর গোলরক্ষক সোমারের।
ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত ব্রাজিল। শেষ কয়েক মিনিটে অ্যান্টনি, রদ্রিগোরা সুযোগ পান। কিন্তু গোলর মুখ খুলতে পারেনি তারা। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে জিতেই ব্রাজিল ব্রাজিল পৌঁছে যায় রাউন্ড অফ সিক্সটিনে।