পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ তৃণমূলের ভাঙ্গন চিত্র ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। গত কয়েকদিন ধরে দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে চলছে মতবিরোধ। তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতাদের মুখে যেমন উল্টো সুর। এমনকি দলের শীর্ষ নেতারা দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রহণ করতে পারছেন না। শীর্ষ নেতাদের কথা মত তা এক প্রকার পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন তৃণমূলের প্রবীণ নেত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবীন নেতা। এই দুই শীর্ষ নেতৃত্বের মতবিরোধের কারণে তৃণমূলের অন্দরে যে বড়োসড়ো ভাঙ্গন ধরেছে তা পরিস্কার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা মেনে নিতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যার কারণে পিসি-ভাইপোর দ্বন্দ্ব চরমে।
তৃণমূলের এক শীর্ষ সংসদ জানিয়েছেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই যে তৃণমূলের ভবিষ্যৎ কান্ডারি হিসেবে তুলে ধরবেন, তা নিয়ে কখনওই আপত্তি ছিল না দলের পুরোনো নেতাদের। ওনাকে স্বাভাবিক উত্তরাধিকারি হিসেবেই মেনে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু এখন তাঁদের দাবি মমতাকে অনুসরণ করে ধাপে ধাপে না এগিয়ে এক ধাক্কায় উঠে আসতে চাইছেন অভিষেক।”
এই প্রসঙ্গ তুলে ধরে তৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান দলে নবীন এবং প্রবীণদের সংমিশ্রণ। তিনি মাঝখানে জেলাসফর, প্রশাসনিক বৈঠক, নবান্নের কাজ এবং রুটিনমাফিক দলীয় কর্মসূচীর মধ্যে আবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত সঠিক সময়ে দলের হাল এমন ভাবে ধরলেন যাতে তৃণমূলের ভবিষ্যৎ আরও শক্ত হবে।”
দেশ থেকে কিভাবে ইংরেজদেরকে তাড়ানো হয়েছিল সেই কথা তুলে ধরে নতুন সুর শোনা গেল সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। বামকে ব্রিটিশদের সঙ্গে তুলনা করে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “গোটা তৃণমূলে নয়, গোটা বাংলাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনো বিকল্প নেই। যে দল তিনি ১৯৯৮ সালে তৈরি করেছিলেন, তার ধারেকাছেও দেশের কোনো আঞ্চলিক দল নেই। ৩৪ বছরের বাম সরকারকে হটানো প্রায় ব্রিটিশদের দেশ থেকে তাড়ানোর মতই বিষয় ছিল। সেটা একক ভাবে মমতা করে দেখিয়েছেন। সেই কৃতিত্বের ভাগিদার অন্য কেউ হবে তার কোনো সুযোগই নেই।”
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘এক ব্যক্তি একপদ’ নীতি সমর্থন করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তিনি তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৬০ বছর বয়সে নেতাদের অবসরের পরিকল্পনা কে সমর্থন করেন সৌগত রায়। তবে তৃণমূলের একাংশের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থানে তৃণমূলের পাঁচ শীর্ষ নেতার মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থে ঘা লাগতেই ফুঁসে উঠছে তারা। যার কারণে তারা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।