পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অন্যতম প্রকল্প হলো ‘দুয়ারে রেশন’। তবে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন সর্বভারতীয় রেশন ডিলার সংগঠন। যার জল গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট অবধি। কিন্তু দুয়ারে রেশন দিতে ডিলারদের এত অনীহার কারণ কি?
রেশন ডিলারদের বক্তব্য তাদের রেশন দিতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু করতে যে পরিকাঠামোর প্রয়োজন তা দেশের কোনো রাজ্যেই উপলব্ধ নেই। দুয়ারে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার জন্য দরকার গাড়ির। কিন্তু গাড়ি কেনার জন্য সরকারের বরাদ্দ টাকা যথেষ্ট নয় দাবি করেছেন রেশন ডিলাররা। আর যদি গাড়ি কেনাও হয়, তাহলেও সব ডিলারের কাছে সেই গাড়ি সুরক্ষিত ভাবে পার্ক করে রাখার মতো পর্যাপ্ত জায়গার অভাব রয়েছে।
সমস্যার শেষ এখানেই নয়। রয়েছে আরো একগুচ্ছ প্রতিবন্ধকতা। মূলত এই প্রকল্প বাস্তবায়নে যে পরিমান লোকবল প্রয়োজন তা কোন রেশন ডিলারদের কাছেই নেই। এছাড়া, যেদিন উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে রেশন দিতে হবে সেদিন দোকান বন্ধ রাখতে হবে। সেদিন যদি কোনো গ্রাহক দোকানে রেশন নিতে আসে তাহলে তাকে খালি হাতেই ফিরতে হবে। তাতে গ্রাহককে অযথা হয়রানির শিকার হতে হবে।
দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন কয়েকজন রেশন ডিলার। কিন্তু হাইকোর্টের রায় গিয়েছে সরকারের পক্ষে। তারপর রেশন ডিলাররা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছেন। সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ধরে নিলেও ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্টই এই প্রকল্পের পরিপন্থী। এনএফসি এর অ্যাক্ট অনুযায়ী, রেশন সামগ্রী কোনোভাবেই দোকানের বাইরে বের করা সঙ্গত নয়।
এ বিষয়ে ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ অ্যান্ড রেশন ডিলার্স ফেডারেশন’-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন। তার দাবি, রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কোনও ভাবেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। বহু বাস্তবিক সমস্যা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে আগেও এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
প্রসঙ্গত, এই সব টানা পোড়েনের মাঝে রাজ্যে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের পাইলট প্রজেক্ট বন্ধ হয়েই আছে। তার প্রধান কারণ রেশন ডিলারদের আপত্তি। আর এটাই বর্তমানে সরকারের কাছে মূল চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও দু-পক্ষই হাল ছাড়তে নারাজ।