পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- এককালে তৃণমূলে তাদের বন্ধুত্ব ছিল অতীব দৃঢ়। বক্তৃতা দেওয়ার মাঝে দুজন দুজনের প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেন মঞ্চ। সেসব এখন অতীত। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার পর তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কে “চাল চোর মন্ত্রী” বললেন শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার হাবড়ার নাংলায় বিজেপির সভায় উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই এই মন্তব্য করেন তিনি, “এখানে যিনি আছেন তিনি বিরাট মাপের চাল চোর মন্ত্রী। রাইস মিলের লোকেরা আমার বলেছেন, ব্যাটাকে হারান।”
কয়েক বছর ধরে যেকোনো ভোটের প্রচারে তৃণমূলের তরফ থেকে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারী। জেলা তৃণমূল দলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের এক ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হতেন তিনি। একসাথে চলত ভোট প্রচার। দলের অনেকেই তাদের বন্ধুত্বের ব্যাপারে অবগত ছিলেন। এর আগে বিভিন্ন সভায় একজন অন্যজনের প্রশংসায় ভরিয়ে দিতেন মঞ্চ। এই সবকিছুর সাক্ষী দলের অনেকেই।
শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছাড়ার আগে রাজনীতি মহলে চলছিল বিভিন্ন জল্পনা। এক সাংবাদিক বৈঠকে যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দিকে এই বিষয়ে প্রশ্ন আসে তখন তার বক্তব্য ছিল, শুভেন্দু অধিকারী হলেন তৃণমূল দলের সৈনিক। তিনি দলে ছিলেন এবং দলেই থাকবেন।
শুভেন্দু বাবু এই সম্পর্কের ইতি টানেন বিজেপি যোগদানের পর, এই বিষয়টি সবার কাছে বোধগম্য তার হাবড়ার বিস্ফোরক মন্তব্যের পর। পরিস্থিতির এখন পরিবর্তন হয়েছে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেছে।
শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “নোট বন্দির সময় রাজ্যের দুজন বিধায়ক টাকা বদল করেছিলেন। আমার কাছে নথি আছে। একজন পূর্ব মেদিনীপুরের বিধায়ক, তিনি ১৫ কোটি টাকা বদল করেছিলেন। আর একজন এখানকার বিধায়ক, ৪ কোটি টাকা বদল করেছিলেন।”
শুভেন্দু অধিকারীর বিস্ফোরক মন্তব্যের পর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “চোরের মায়ের বড় গলা। শুভেন্দু আয়নায় নিজের মুখের প্রতিচ্ছবিটা দেখুন। কি ছিলেন, আর কি হয়ে গিয়েছেন। নিম্ন রুচির পরিচয় দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেন, “সেচ ও পরিবহন মন্ত্রী থাকার সময় যে দুর্নীতি হয়েছে, তার তদন্ত হওয়া উচিত। চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন কিনা, তারও তদন্ত দাবী করছি। শুভেন্দুর মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরা।”
শুভেন্দু অধিকারী বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নেমে রাহুল সিনহার সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। রাহুল সিনহা মঞ্চের নীচে বসে বক্তব্য শুনছিলেন। নির্বাচন কমিশন তাকে ৪৮ ঘন্টা প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এই ব্যাপারে রাহুল সিনহার বক্তব্য, “দর্শক হিসেবে বসেছিলাম। মঞ্চে উঠিনি, প্রচার করিনি। দর্শক হিসেবে যেতেই পারি।” জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “এটা করা যায় না। কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছি।”