পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ সৎ চেষ্টা ও মনের জোর থাকলে সকল অসম্ভবকেই নিমেষে সম্ভব করা যায়। যদিও বর্তমানে আমরা টাকা-পয়সাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি, কিন্তু এই টাকা পয়সা থেকেও অনেক বেশি দামি হল প্রতিভা। আর সেই প্রতিভা দিয়েই নজির গড়ল এক দরিদ্র পরিবারের উজ্জ্বল নক্ষত্র সরস্বতী রজক।
নুন আনতে পান্তা ফুরায় – এরকম পরিবারে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন যেন কল্পনারও অতীত। তেমনি এক পরিবারে জন্ম সরস্বতী রজকের। তার বাড়ি দুর্গাপুর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে দেশবন্ধু নগর কলোনিতে। তার বাবা সামান্য একজন গ্যাস ওভেনের মিস্ত্রি এবং মা গৃহবধূ। কোন রকমে টেনেটুনে সংসার চালান তার বাবা। এরকম ঘরে মেয়েকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন সত্যি যেন ‘ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন’ দেখার মত। কিন্তু এই সকল স্বপ্নকে অবশেষে সত্যি করল দৃঢ়চেতা সরস্বতী রজক। এই বছর নিট পরীক্ষায় তার স্থান ৬০০০। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে সুযোগ করে নিল সরস্বতী।
আর পাঁচজন দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের মতো তারও প্রাথমিক শিক্ষা হয় গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর সে স্থানীয় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাস করে। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে বোটানিতে অনার্স নিয়ে ত্রিবেণীদেবী কলেজে ভর্তি হয়। তার একজন কাছের মানুষ ছিল তার দিদা। পয়সার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় তার চোখের সামনে পরলোক গমন করেন তার দিদা। আর সেই দিন থেকেই তার জেদ চাপে চিকিৎসক হওয়ার। তার মধ্যে সেই জেদটা ক্রমশ বাড়তে শুরু করে দরিদ্র পরিবারের অসুস্থ মানুষজনদের দেখে।
মনের জোড়েই অক্লান্ত পরিশ্রম করে ২০২২ সালে নিট পরীক্ষায় বসে, প্রথমবারেই ৬০০০ রাঙ্ক করে সরস্বতী। তার এই রেজাল্টে গর্বিত তার বাবা ও মা। কোনদিনই ভাবতে পারেননি যে তাদের মতো দরিদ্র পরিবারে থেকে তাদের মেয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। তার বাবা-মায়েরও ইচ্ছে যে, মেয়ে বড় ডাক্তার হয়ে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের সেবা করবে।