কন্যাসন্তান প্রকল্প, কেন্দ্র সরকার যোজনা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
ছবি- সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- যে দেশে মেয়েরা এগিয়ে থাকে সেই দেশ কখনও পিছিয়ে পড়তে পারেনা। সেই লক্ষ্যেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রথম থেকেই মেয়েদের স্বার্থে একের পর এক বড় বড় সিদ্ধান্ত এবং প্রকল্প চালু করেছেন। কেন্দ্র সরকারের মেয়েদের জন্য যেমন আছে কিছু দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা তেমনই আছে কিছু নতুন নতুন প্রকল্প।

মেয়েদের জন্য কেন্দ্র সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল বেটি বাঁচাও বেটি পাড়াও, সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা, বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা, সিবিএসই উড়ান প্রকল্প, মেয়েদের মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকারের ইনসেনটিভ প্রকল্প।

প্রথমেই আসা যাক বেটি বাঁচাও বেটি পাড়াও প্রকল্পে। এই প্রকল্পে দেশের কন্যা সন্তানদের জীবন এবং ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ২২ শে জানুয়ারী এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন। ২০০১ থেকে ২০১১ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতে দেখা গেছে যে দেশে মেয়েদের গড় সংখ্যা ছেলেদের তুলনায় ভীষণ কম।

এক্ষেত্রে কন্যাসন্তান রক্ষার উদ্দেশ্যে চালু হয় এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল, লিঙ্গর ভিত্তিতে কন্যাভ্রুন হত্যা রোধ, কন্যাসন্তানের শৈশব রক্ষা, লিঙ্গসাম্য, মেয়েদের সুন্দর এবং নিরাপদ জীবন সুনিশ্চিত করা, তাদের স্কুল যাওয়া নিয়মিত এবং নিশ্চিত করা, মেয়েদের সম্পত্তির অধিকার নিশ্চিত করা।

এরপর হল সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা। এই প্রকল্পটিও ২২শে জানুয়ারী ২০১৫ সালে চালু হয়। এই প্রকল্পে কন্যাসন্তান তাঁর মা বাবা বা আইনি অভিভাবকের সাথে ব্যাংকে অ্যাকাউনট খুলতে পারবে যেখানে প্রথমেই থাকবে মেয়েটির নাম। মেয়ের বয়স ১০ বছর হলে খোলা যাবে এই অ্যাকাউনট এবং ১৫ বছর নুন্যতম কিংবা তাঁর পর মেয়ের বিয়ের অবধি চালানো যেতে পারে এই অ্যাকাউনট। তবে এই অ্যাকাউনট পুরো হবে খোলা থেকে মেয়ের বয়স ২১ হওয়া অবধি।

এই যোজনার কমপক্ষে ২৫০ টাকা থেকে দেড় লক্ষ্য টাকা পর্যন্ত রাখা যেতে পারে এবং আগে সুদের হার ৯.১ এবং ৯.২ থাকলেও বর্তমানে টা ৭.৬ হয়েছে। ব্যাঙ্ক এবং পোস্টঅফিসে খোলা যাবে এই অ্যাকাউনট। তবে আয়কর আইনের ৮০ সি ধারায় প্রায় দেড় লক্ষ্য টাকা অবধি পাওয়া যাবে কড় ছাড়। এছাড়া মেয়ের বয়স ১৮ হলে সেক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে আংশিক টাকা তোলা যেতে পারে।

এরপর হল বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা। এক্ষেত্রে কন্যা সন্তান এবং তার মায়ের জীবন এবং সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে কন্যাসন্তান জন্মের সাথে সাথেই মাকে ৫০০ টাকা নগদ দেওয়া হয়। এছাড়াও মেয়ে স্কুলে ভর্তি হলে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণী অবধি ৩০০, চতুর্থতে ৫০০, পঞ্চম এবং ষষ্ঠতে যথাক্রমে ৬০০ এবং ৭০০ অষ্টমে ৮০০ আর দশম থেকে দ্বাদশ অবধি ১০০০ টাকা করে বার্ষিক দেওয়া হয়। তবে মেয়ের বয়স ১৮ হলেই পুরো টাকা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা আছে।

এরপর হল সিবিএসসি উড়ান প্রকল্প। এই প্রকল্পে ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কারিগরি ক্ষেত্রে মেয়েদের নিয়োগের ওপর জোর দেওয়া হয়ে থাকে এবং সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পে প্রথমেই প্রত্যেককে একটি করে ট্যাব দেওয়া হয় নিজেদের পড়াশোনার সুবিধের জন্য। প্রতি বছর পিছিয়ে পরা ১০০০ জন ছাত্রীকে এই আওত্তায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়।

এই প্রকল্পের অধীনে প্রতি বছর বিভন্ন কলেজে শিক্ষক এবং প্রিন্সিপাল নিয়োগ করা হয়। এছাড়া একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী মেয়েদের বিনামূল্যে বিভিন্ন কোর্স এবং অনলাইন কোর্স করান হয়। এছারাও আছে হেল্পলাইন নম্বর। এরসাথে সাথে মেয়েদের পড়াশুনো এবং অগ্রগতির নথিভুক্তিকরণও হয়।

শেষে আছে মেয়েদের মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইনসেন্টিভ প্রকল্প। এক্ষেত্রে ক্লাস ৮ পাস তফশিলি এবং জনজাতি ভুক্ত মেয়েরা এবং অন্যান্য সামাজিক গোষ্ঠীর ক্লাস ৮ পাস  মেয়েরা যাতে মাধ্যমিক পাস করতে পারে সেই লক্ষ্যে তাদের নামে ব্যাংকে ৩০০০০ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করা হয়। তবে ১৮ বছর হলে এই অর্থ পুরো বা আংশিক তোলা যেতে পারে। তবে বিবাহিত বা বেসরকারি কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারি স্কুলে পরা  মেয়েরা এই সুবিধে পাবেনা। এছাড়াও ক্লাস ৯ এ ভর্তির সময় মেয়েদের বয়স ১৬ র কম হওয়া বাধ্যতামূলক।