পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- বর্তমানে ভারতবর্ষ পোলিও শূন্য একটি দেশ। নিরন্তন টীকাকরণের ফলে বর্তমানে ভারতবর্ষে নতুন পোলিও আক্রান্তের সংখ্যা একেবারে শুন্য। ২০১১ সালের পর থেকে নতুন করে আর কেউ পোলিও ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। কিন্তু তারপরেও দেশের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা কোনরকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। তার কারণ পোলিও নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার সময় এখনো আসেনি। আর সেই কথা মাথায় রেখেই বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পোলিও সুরক্ষা কবজ আরো জোরদার করতে চাইছে টিকাকরণের দায়িত্ব থাকা কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
বর্তমানে পোলিওর টিকা বাচ্চাদেরকে দুটি করে ডোজ দেওয়া হয়। তবে এবার থেকে দুটি ডোজ এর সাথে অতিরিক্ত আরও একটি ডোজ দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী বছরের ১ লা জানুয়ারি থেকেই এই নতুন নিয়ম চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে কোন নবজাতক শিশুর জন্মের প্রথম ৬ সপ্তাহ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে পোলিওর টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয়। তবে নতুন নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে এবার থেকে শিশুর জন্মের ১৪ সপ্তাহ থেকে ৯ মাস বয়সের মধ্যে পোলিও টিকার আরো একটি ডোজ নিতে হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ ও ইমিউনাইজেশন এই নিয়ম পরিবর্তনের ওপর বিশেষভাবে নজর রাখছে। টিকার এই তৃতীয় ডোজ় দেওয়া হবে শিশুর বাঁ হাতের ওপরের দিকে। আগামী বছরের ১ লা জানুয়ারি থেকেই যাতে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই নিয়ম কার্যকর করা হয় সেটি বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে নতুন নির্দেশিকায়। সম্প্রতি এক বিশেষজ্ঞ কমিটির বৈঠকে পোলিওর বিরুদ্ধে সুরক্ষা কবজ আরো জোরদার করার লক্ষ্যে তৃতীয় ডোজের পরামর্শ দেয়। তারপরেই কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে কেন্দ্র বলেছে শিশুদের প্রথম দুটি ডোজ যেমন দেওয়া হতো এখনো সেই রকমই চলবে। তার সঙ্গে তৃতীয় ডোজ দেওয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রথমে ট্রেনিং দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রত্যেকটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে জেলাগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রদান করার কথা বলা হয়েছে। দেশের প্রতিটি বাচ্চা যাতে তৃতীয় ডোজ অবশ্যই পায় সে ব্যাপারে কেন্দ্র সরকার বিশেষভাবে নজর রাখবে।
উল্লেখ্য এই পোলিও রোগ আসলে একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ। যে ভাইরাসের পোশাকি নাম পোলিওভাইরাস। এই রোগে মূলত পাঁচ বছরের নিচের বয়সের বাচ্চারাই বেশি আক্রান্ত হয়। এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে মানুষ পক্ষঘাতে আক্রান্ত হতে পারে, এমনকি তার মৃত্যুর কারণও ঘটতে পারে। মূলত, নাক ও মুখ দিয়ে এই ভাইরাস মানব শরীরে প্রবেশ করে, তাই সাধারণ মানুষের এই ভাইরাস নিয়ে অত্যন্ত সচেতন থাকা জরুরী।