করোনা, corona, corona virus, সুব্রত কর্মকার, সত্তরঞ্জন কর্মকার,ডোমের ডাকে সাড়া দিল মৃত ব্যক্তি
চিত্র- সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ দেশজুড়ে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা প্রায় চার লাখের কাছাকাছি পৌঁছেছে। দেশের সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গেও বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। অতিমারি করোনার ফলে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে।

অতিমারি করোনায় দেশজুড়ে অক্সিজেনের আকাল দেখা দিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিমাণে নেই কোভিড ঔষধ, এমনকি কোভিড ভ্যাকসিনেরও সংকট দেখা দিয়েছে। যার ফলে দেশজুড়ে চলছে মৃত্যু মিছিল। তবে সত্যিই কি অক্সিজেন ও কোভিড ঔষধ না থাকায় মানুষ মরছে ? এমনই এক রহস্যময় ঘটনা উঠে আসলো পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলা থেকে তাতে চিকিৎসা নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠে আসছে।

করোনা, corona, corona virus, সুব্রত কর্মকার, সত্তরঞ্জন কর্মকার
চিত্র- সংগৃহীত

নদীয়া জেলার কল্যাণী সরকারি হাসপাতালে ঘটলো এক রহস্যময় ঘটনা। নদীয়া জেলার ধানতলা হিজুলিয়া এলাকার বাসিন্দা সুব্রত কর্মকার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার পরিজনেরা গত ১০ মে রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর তার করোনা পরীক্ষা করা হয়। ১৩ ই মে তার করোনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। যার ফলে ২৭ বছরের সুব্রত কর্মকার-কে নদীয়ার কল্যাণী হাসপাতালে হস্তান্তরিত করা হয়।

আরও পড়ুনঃ কাল লকডাউন, তাই আজ যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে অনেক রাত অবধি চলবে বাস পরিষেবা

১৪ ই মে সুব্রত কর্মকার এর পরিবারকে হাসপাতালের তরফ থেকে ফোন করে জানানো হয়, করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সুব্রতর। মৃত্যুর খবর পেতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার পরিজনেরা এবং হাসপাতালে ছুটে যান সুব্রতর বাবা সত্যরঞ্জন কর্মকার। হাসপাতালে পৌঁছে তিনি ছেলের ডেথ সার্টিফিকেটও সংগ্রহ করেন।

করোনা, corona, corona virus, সুব্রত কর্মকার, সত্তরঞ্জন কর্মকার
চিত্র- সংগৃহীত

তবে ডেথ সার্টিফিকেট-এ ঘটল আরও একটি ঘটনা। সুব্রত কর্মকার এর ডেথ সার্টিফিকেট-এ মৃতদেহ সংগ্রহ করতে আসা বাবা সত্য রঞ্জন কর্মকার কেউ মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। সত্যরঞ্জন কর্মকার নামের আগে বসিয়ে দেওয়া হল ‘late’। মানুষ মাত্রই ভুল হয়, কিন্তু জীবিত মানুষকে যখন মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

তবে সেদিকে মন কান না দিয়ে ছেলেকে শেষবারের মতো দেখার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন সত্যরঞ্জন বাবু। সুব্রতর বাবা সত্যরঞ্জন বাবু জানিয়েছেন, দুপুর থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে হাসপাতালে। তিনি জানান, হাসপাতাল থেকে তাকে জানানো হয়, ডোম আসে সন্ধ্যে ছটার পর। তাকে সন্ধ্যে ছটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তার আগে ডেড বডি দেখানো কোনভাবেই সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনঃ ঈদের উপহার হিসেবে মুসলিম জনবহুল এলাকাকে নতুন জেলা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার

ডোম আসতেই ঘটলো এক অদ্ভুত ঘটনা। সত্যরঞ্জন বাবু তার মৃত ছেলেকে দেখতে গিয়েছেন। তবে ডোম সত্যরঞ্জন বাবুকে পরপর দুটি মৃতদেহ দেখায় এবং সেই দুটি মৃতদেহ সুব্রত কর্মকার এর বলে দেখানো হয়। ওই দুটি মৃতদেহ মধ্যে তার ছেলের মৃতদেহ নেই বলে দাবি করেন সত্যরঞ্জন বাবু। এরপর কি করবে ডোম বুঝে উঠতে না পারায়, কোভিড ওয়ার্ডে গিয়ে সুব্রত নাম ধরে ডাকতে শুরু করে।

করোনা, corona, corona virus, সুব্রত কর্মকার, সত্তরঞ্জন কর্মকার
চিত্র- সংগৃহীত

সত্যরঞ্জন বাবু জানিয়েছেন, ডোম কিছুক্ষণ ধরে ডাকাডাকি করতেই, সুব্রত সাড়া দিয়ে ওঠে এবং বলে এই যে আমি। কী আশ্চর্যজনক ঘটনা। জীবিত মানুষকেই এরা একপ্রকার চিতায় তুলে দিয়েছে! ভুল মানুষেরই হয় তাই বলে এত বড় ভুল ! এরপর আর দেরি করেননি সত্যরঞ্জন বাবু। তৎক্ষণাৎ ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান তিনি এবং তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাড়িতেই ছেলেকে হোম আইসোলেশন এ রাখবেন।

আরও পড়ুনঃ লক ডাউনে বন্ধ থাকবে মদের দোকানও, জানালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব

তবে এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে বহু? একজন জীবিত রোগীকে কিভাবে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়? একটিবারও কি দেখা হয়েছিল তার ডেথ বডি ? তাকে না দেখেই কিভাবে তার নামে জারি করা হলো ডেথ সার্টিফিকেট, সে বিষয়ে উঠছে প্রশ্ন ? এই ঘটনাকে ঘিরে কল্যাণীর মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, এই ঘটনাটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে জানানো হয়েছে। তবে এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মহকুমা শাসক।