পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে তিন বছর ধরে নিজেকে এবং তার ছেলেকে তাদের গুরুগ্রামে বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন এক মহিলা। খবর চাউর হতে স্বাস্থ্য, পুলিশ এবং শিশু সেবা কর্মকর্তাদের একটি দল তাদের বন্দিদশা থেকে মুক্ত করতে সহায়তা করেছে।
ওই মহিলার নাম মুনমুন মাঝি। তিনি কোভিড সংক্রামিত হওয়ার ভয়ে তার স্বামী সুজন মাঝিকেও বাড়িতে ঢুকতে দিতেন না। তিনি সুজন বাবুকে বাধ্য করেছেন তাদের ছেলে এবং তাকে মারুতি কুঞ্জ এলাকার বাড়িতে রেখে গত তিন বছর দূরে রাখতে। ২০২০ সালে যখন প্রথম লকডাউনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয় তখন সুজন মাঝি অফিসের কাজের জন্য বাড়ি ছেড়েছিলেন। তারপর থেকে মুনমুন তার স্বামীকে আর তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি।
সুজন মাঝি একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে একজন প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করেন। তিনি তার স্ত্রীকে বারবার অনুরোধ করা সত্বেও কোন লাভ না হওয়ায়, শেষে তিনি একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা শুরু করেন। তিনি গত তিন বছর ধরে শুধু মাত্র ভিডিও কলের মাধ্যমে মুনমুন ও তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তিনি অনলাইনে বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল আর ছেলের স্কুলের ফি পাঠিয়ে দিতেন। এমনকি তিনি মুদি বাজার কিনে মূল দরজার বাইরে রেখে দিতেন।
ঘরে নিজেদের তালাবদ্ধ রেখে মুনমুন মাঝি বাইরের বিশ্বের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে গিয়েছেন। এর কারণে তিনি এলপিজি ব্যবহার বন্ধ করে দেন। কারণ এলপিজি রিফিল করতে হলে বাইরে থেকে লোক আসবেন। যার কারণে তিনি ইন্ডাকশন ওভেন ব্যবহার শুরু করেন।।এক প্রকার বাধ্য হয়েই মুনমুন মাঝি তার ছেলেকে স্মার্টফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কারণ তার ছেলের পড়াশুনার জন্য অনলাইন ক্লাসে যোগ দিতে হত।
গত তিন বছর ধরে সুজন তার স্ত্রীকে এই বন্দিদশা থেকে বেরিয়ে আসতে রাজি করানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে মুনমুন তার দাবিতে অনড় ছিল। তার একটাই শর্ত ছিল যে, বাচ্চাদের জন্য কোভিড ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তবেই তিনি এবং তার ১০ বছরের ছেলে বাইরে বেরোবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য কোন টিকা বাজারে আসেনি। অবশেষে স্বাস্থ্য, পুলিশ এবং শিশু সেবা কর্মকর্তাদের কানে এই খবরটি পৌঁছানোর পর মা এবং ছেলেকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।