পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার পর রাজ্যে দাপট বাড়ছে ডেঙ্গুর। সাথে সাথে বেড়েই চলেছে মৃতের হার। বর্তমানে রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ৮৪ জনের। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু সচেতনতা ছড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।
চিকিৎসকদের মতে, জ্বর স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়লে এবং বহুদিন অবধি থাকলে অবশ্যই নিকটবর্তী হাসপাতালে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাতে হবে। জ্বরের সাথে হতে পারে প্রচন্ড মাথাব্যথা, তার সাথে বমি। শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি, নাক এবং মাড়ি থেকে রক্তপাত, গ্রন্থি ফুলে ওঠা, জয়েন্টে ব্যথা, চোখের মনির পেছনে ব্যথা, ক্লান্তিভাব এই ধরনের উপসর্গ থাকলে অবশ্যই ডেঙ্গু টেস্ট করানো প্রয়োজন।
করোনার পর রাজ্যে ডেঙ্গুর আগমনে প্রশাসন যথেষ্ট চিন্তিত। পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুর আতঙ্ক ক্রমে বেড়েই চলেছে। মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রশাসন সাবধানতা অবলম্বনে প্রতিনিয়ত টেলিভিশন, রেডিও এবং বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে বার্তা প্রচার করছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে মাইক দিয়ে সচেতনতা প্রচার করা হচ্ছে।
রাত্রিবেলা মশারি টানিয়ে সোয়া, দিনেরবেলায় মশা মারার কয়েল অথবা ইলেকট্রিক কয়েল ব্যবহার আবশ্যক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এছাড়াও বাড়ির মধ্যে এবং বাড়ির আশেপাশে কোনো জায়গায় জল জমতে দেওয়া যাবে না। টব অথবা চৌবাচ্চার মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। ড্রেনে প্রয়োগ করতে হবে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক অথবা কেরোসিন তেল।
ডেঙ্গু আক্রান্তের গণনা হিসেবে এখনো অবদি রেকর্ড আক্রান্ত হয়েছে বর্তমানে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত স্থান | আক্রান্তের সংখ্যা |
রামপুরহাট | ১১৯ |
হুগলি | ৪,৮৩১ |
পূর্ব-বর্ধমান | ৫৮৬ |
পশ্চিম-বর্ধমান | ৩০০ |
ঝাড়গ্রাম | ৮৩ |
মুর্শিদাবাদ | ৫,০৭৩ |
হাওড়া | ৫,২১২ |
কলকাতা | ৫,৪২৮ |
জলপাইগুড়ি | ৩,৩১৬ |
বিষ্ণুপুর | ৯৮ |
বাঁকুড়া | ৬৪৭ |
দার্জিলিং | ২,৬২২ |
উত্তর দিনাজপুর | ৩৪৬ |
কালিংপং | ১০০৭ |
মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনো পর্যন্ত প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, তৃতীয় স্থানে রয়েছে হাওড়া এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে হুগলি জেলা।
উল্লেখ্য, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ফের মৃত্যু হল উত্তরপাড়া দোলতলার এক ব্যক্তির। মৃতের নাম স্বপন ঘোষ। বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। একসপ্তাহের উপর ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। এরপর শারীরিক অবনতি হওয়ায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে কলকাতায় নিয়ে গেলে, গত বুধবার চিকিৎসকরা স্বপন ঘোষকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
এর আগেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল কলকাতার পশ্চিম পাতুড়িয়ার বাসিন্দা কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যাইয়ের। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তিনিও জ্বরে ভুগছিলেন। শারীরিক অবনতি হওয়ার জন্য তার পরিবারের লোকজন টালিগঞ্জের একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করায়। সেখান থেকে বাইপাসের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যাইয়ের।