তৃণমূল, নির্বাচন কমিশন, মমতা ব্যানার্জি, অমিত শাহ, TMC, election commission, mamata banerjee, amit shah
ছবি - সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ- পুনরায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নোটিশ পাঠানো হলো তৃণমূলকে। নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞা না মানার জন্য শুক্রবার তাদের দ্বিতীয় নোটিশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের এহেন পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ মমতা ব্যানার্জি সহ গোটা তৃণমূল বাহিনী। 

এদিন মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিটা ভোটের দিন প্রচার করেন। উনি না করলে আমরাও হয়তো করতাম না। অন্য রাজ্যে কর। বাংলায় কেন ? এখানে ভোট চলছে। তখন বিধিভঙ্গ হয় না ?’ নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে তার বক্তব্য, ‘আমাকে আপনারা আগের ভোটেও অনেকবার শোকজ করেছেন। কিসের জন্য? ঠিকমতো প্রচার পর্যন্ত করতে দেননি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এত উল্টোপাল্টা কথা বলেন, তাতে বিধিভঙ্গ হয় না। অমিত শাহ যা-তা বলে যান, বিধিভঙ্গ হয় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণের কাছে বক্তৃতা দিলে বিধিভঙ্গ হয়।’ এর সাথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিয়েও তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি সিআরপিএফ এবং সিএসএফ নিয়ে ততক্ষনই বলব, যতক্ষণ তারা বিজেপি করবে। বিজেপি না করলে আমি তাদের স্যালুট করব।’

রাজ্যের কিছু কিছু উচ্চপদস্থ পুলিশকর্মী কেন্দ্রের দিকে রয়েছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল নেত্রীর। এই বিষয়ে মন্তব্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেককে কেনা হয়েছে আমি শুনেছি। গ্রামে গ্রামে গিয়ে পুলিশ কেন ভয় দেখাবে? কেন বলবে বিজেপিকে ভোট দিতে? কেন লোককে মারবে? নন্দীগ্রামের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘যে খুন করেছে, তাকে এখনো গ্রেফতার করেনি। আমার হাতে পুলিশ থাকলে দেখিয়ে দিতাম মজা। ভোটের পরে আমি থাকবো, দেখব কত অশান্তি কারা করতে পারে।’

অপরপ্রান্তে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতায় এসে মন্তব্য করেন, ‘আমাদের রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে অন্যান্য নেতাকর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে। ভবানীপুরে থানার ভেতর বসা কর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব কোন ঘটনার নিন্দা করেননি।’ তিনি আরো বলেন, ‘একসময় মমতা দিদি অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য তিনবার সংসদে হল্লা করেছেন। একসময় তিনি বলতেন, সিআরপিএফ ছাড়া ভোট হলে রিগিং হবে। এখন তিনি সিআরপিএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন।’

নির্বাচন কমিশনের দিকে মমতা ব্যানার্জি কটাক্ষ করে বলেন, ‘তৃণমূলকে খতম করতে অনেক অত্যাচার, অবিচার, দুরাচার চলছে। সবই তো বদলে দিয়েছেন। প্রতিদিন যা বলছে তাই করছেন। কিন্তু তৃণমূলকে খতম করতে পারবেন না। কারণ আমার সাথে মানুষ আছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিজেপি আপনাদের কে ? ভাবেন কি আপনারা আমায় ? তিনটে লোক মিলে যা ইচ্ছে করবেন?’ তার বক্তব্য, ‘জওয়ানদের সম্মান করি। কিন্তু অমিত শাহ-কে স্যালুট করি না। অমিত শাহের নির্দেশে এরা কাজ করছে।’

অমিত শাহ মন্তব্য করে বলেন, ‘কোনদিন দেখিনি কোন মুখ্যমন্ত্রী বা কোন দলের শীর্ষ নেতা বা নেত্রী নিরাপত্তা বাহিনীকে ঘিরে ফেলতে বলেন। এটা উনি কি বলেছেন? কেন বলেছেন ? লোককে অরাজকতা করতে বলছেন? উনি কি চান ভোটে অশান্তি হোক ?’ শুভেন্দু অধিকারীর ব্যাপারে তিনি বলেন,মমতাদিদি এবং শুভেন্দুজি দুজনেরই নোটিশের জবাব দেওয়া উচিত। শুভেন্দুজি উত্তর দিচ্ছেন।’

বিজেপি সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্কবার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা চাই শান্তিতে ভোট। কিন্তু ওরা গুন্ডামি করছে। তবে ওরা গুন্ডামি করবে একদিন। আমরা থাকবো ৩৬৫ দিন। মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,বিজেপি ভয় দেখালে বলবেন, শিল-নোড়া দেখেছিস ? এটা দিয়ে মসলাও বাটি আবার দাঁতের গোড়াও ভাঙ্গি।’

নির্বাচন কমিশনের থেকে আগত নোটিশ সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘এতে আমার কিছু যায় আসে না। জনগণের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকব। তিনি আরো বলেন, ‘আবার বিধিভঙ্গের কেস করবে। আমার বিরুদ্ধে যত কেস করবে, তত দীর্ঘজীবী হব আমি।’