পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ ধাপে ধাপে স্কুল-কলেজ আনলকের পথে রাজধানী দিল্লি। করোনা কালের মধ্য দিয়ে ফের একবার স্কুল-কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। এর আগে অর্থাৎ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে কোভিড বিধি মেনে স্কুল কলেজ খোলা হয়েছিল দিল্লিতে।
তবে স্কুল খোলার কয়েকদিনের মধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে। মারণ রোগ করোনা ভাইরাস এর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ায় স্কুল কলেজ সব কিছুই বন্ধ করতে হয়। তারপর থেকেই অনলাইনে ক্লাস চলছিল দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। তবে এই মুহূর্তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আশায় ফের একবার স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার।
ধাপে ধাপে খুলবে স্কুল, কলেজ ও কোচিং সেন্টার। দিল্লি প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বুধবার থেকে চালু হবে স্কুল। তবে শুরুতেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের পঠন পাঠন শুরু হবে। তার এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ৮ সেপ্টেম্বর থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদেরও পঠন পাঠন শুরু হবে। গত শুক্রবার দিল্লি বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে।
করোনার তৃতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই চোখরাঙানি শুরু করে দিয়েছে। তার মধ্যেই আবার দিল্লি সরকার নতুন করে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিল্লি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে অবশ্য চিকিৎসকদের একাংশ সমর্থন করছে না। চিকিৎসকদের মতে, স্কুল খোলার বিষয়ে তাড়াহুড়ো করাটা বোকামি। যে সমস্ত পড়ুয়ারা স্কুলে উপস্থিত হবে তাদের বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীর টিকাকরণ হয়নি।
করোনা ভাইরাস এর জেরে স্কুল-কলেজ থেকে সুরু করে সব কিছুই বন্ধ রাখতে হয়েছিল সরকারকে। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার ফলে বহু পড়ুয়ার ক্ষতি হয়েছে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই করোনা কালের মধ্য দিয়ে স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেজরিওয়াল সরকার।
স্কুল খোলার বিষয়ে এইমসের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নবীত উইগ জানিয়েছেন, “স্কুল খোলার ফলে কতটা লাভ হবে এবং কতটা ঝুঁকি থেকে যাবে, সেটা ভেবে দেখতে হবে। সবদিক খতিয়ে দেখে তবেই স্কুল খোলা উচিত। লাগাতার এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হবে। আরও অনেক টিকা আসবে এবং মানুষকে আরও টিকা দেওয়া হবে। যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হল, সবাইকে টিকা নিতে হবে। কারণ, যতদিন না সবাই টিকা নিচ্ছেন এবং কোভিড মেনে চলছেন, ততদিন আমরা এই দেশকে করোনামুক্ত করতে পারব না।”
দিল্লি প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ৫০ শতাংশ পড়ুয়া নিয়ে স্কুল-কলেজে পঠন-পাঠন শুরু হবে। ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে কোভিড বিধি মেনে ডেস্ক সাজানো শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও পড়ুয়াদেরকে কোভিড বিধি মেনে মাস্ক ও স্যানিটাইজার নিয়ে স্কুলে আসতে হবে।
দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া জানিয়েছেন, “১ সেপ্টেম্বর থেকে সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হবে, স্কুলে যাওয়ার আগে শিশুদের অভিভাবকের সম্মতিপত্র বাধ্যতামূলক। কোন পড়ুয়াকে স্কুলে যাওয়ার জন্য জোর করা হবে না। কেউই স্কুলে যেতে রাজি না হলে তাকে অনুপস্থিত হিসেবেও দেখানো চলবে না। কোভিড বিধি মেনেই স্কুলে আসতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।”