পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরের উপর অবস্থিত নিম্নচাপ তার গতি বাড়িয়ে ক্রমশ বঙ্গের দিকেই এগিয়ে আসছে। ইতিমধ্যেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় তার দাপট দেখাতে শুরু করেছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ বাংলার দিকে থাকলেও, শেষ মুহূর্তে কিছুটা হলেও রেহাই পাচ্ছে বাংলা।
শেষ মুহূর্তে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ওড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে বাংলায় কিছুটা লন্ডভন্ড চালাবে এই ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, গতবছর গোটা দক্ষিনবঙ্গে দাপট দেখিয়েছিল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান এর থেকে ইয়াস কম গতি নিয়ে বাংলায় প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। তবে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলায় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
এর পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সর্তকতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর এর পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে আজ। সেখানে জানানো হয়েছে, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ হুগলি জেলায় ভারী বৃষ্টির ফলে বন্যা মতো পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে।
রাজ্যের মানুষদের সর্তকতা জারি করে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী দুই দিন প্রবল বৃষ্টির ফলে নদীর জলের স্তর বৃদ্ধি পেতে পারে। রাজ্যের একাধিক নদী তথা কংসাবতী, দামোদর ও ময়ূরাক্ষী এবং অজয় নদীর জলের স্তর হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে। প্রবল বৃষ্টির ফলে এবং নদীর জলোচ্ছ্বাস এর মধ্য দিয়ে একাধিক জলাধার তাদের জল ছেড়ে দিতে পারে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জলাধার থেকে জল ছাড়তেই রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবং কেন্দ্রের জলসম্পদ মন্ত্রও একই দাবি জানিয়েছেন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আমফান এর তুলনায় ইয়াসের গতিবেগ কিছুটা হলেও পশ্চিমবঙ্গে কম থাকবে। ঝড়ের গতিবেগ কিছুটা কম হলেও, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বঙ্গে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামীকাল অর্থাৎ ২৬ তারিখ সকাল ৮ টা থেকে ১০ টার মধ্যে সমুদ্র থেকে প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতি নিয়ে দীঘা ও বালেশ্বরের উপকূলে আছড়ে পড়বে এই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
তবে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ ৮৫ থেকে ১০০ কিলোমিটার হবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরে হাওয়ার গতিবেগ প্রায় ১০০ অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং বীরভূমে হাওয়ার গতিবেগ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। অতিবৃষ্টির ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতে কমলা সর্তকতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।