india news, news, bangla news, bengali news, health news, mamta banerjee, সাস্থসাথী কার্ড হাতে পেয়েও বৃদ্ধ বাবাকে হাসপাতালে ভরতি করাতে পারলেন না যুবক !
ছবিঃ সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ বৃদ্ধ বাবা দিলীপ কুমার দাসের বৃহস্পতিবার রাতে আচমকা বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করার উদ্দেশ্যে শুক্রবার ঘোড়ার মতো ছুটতে হলো ছেলেকে। হাতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকার সত্বেও কোনও হাসপাতালে ভর্তি করাতে পারলেন না বৃদ্ধ বাবাকে। ‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর যখন কোনো মূল্যই নেই। তাহলে কি দরকার স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের’?

নিউ আলিপুর এর বাসিন্দা সুদীপ্ত দাস। দিন ১৫ হলো হাতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এসেছে। সেই কার্ড হাতে নিয়ে বৃদ্ধ বাবাকে হাসপাতলে ভর্তি করাতে শুক্রবার খুব ছোটাছুটি করার পরও ভর্তি করাতে পারলেন না বাবাকে। বৃদ্ধ বাবা বুকে যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে তিনি তার বাবাকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সাফ সাফ জানিয়ে দেন, বৃদ্ধের অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমে ৬২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। শরীরে উচ্চ রক্তচাপও রয়েছে। তাকে হৃদরোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো যুক্ত হাসপাতালে নিয়ে অতিসত্বর চিকিৎসার প্রয়োজন।

বৃদ্ধার পরিবার সূত্রে খবর, তারা আরেকটি স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করেন কিন্তু সেখানেও কোন সুযোগ পাননি তারা। বৃদ্ধার পুত্র সুদীপ্ত দাস জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় কোন কোন হাসপাতাল রয়েছে। তার একটি লিস্ট বার করি। ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভোঁর পাঁচটা নাগাদ ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর দ্বারা চিকিৎসা পেতে হলে যা যা করতে বলা হয়, সেই হিসেবে সুদীপ্তর কাছে সময় খুবই কম।

সুদিপ্ত দাস জানান, হাসপাতাল থেকে আমাকে জানানো হয়। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর দ্বারা চিকিৎসা পেতে। সকাল ন’টায় স্বাস্থ্যসাথী বিভাগ খুলবে সেখানে আমার কার্ড টি সচল আছে কিনা দেখতে হবে। তারপর কার্ড সচল থাকলে রোগীর নাম নথিভুক্ত করে আসতে হবে। স্বাস্থ্যসাথী বিভাগের শয্যা ফাঁকা হলে ডেকে নেওয়া হবে। তার অভিযোগ, দিন পনেরো হলো কার্ড হাতে পেয়েছি। এরই মধ্যে কার্ডটি বন্ধ হওয়ার কোনও কথাই ওঠে না। কিন্তু সুদীপ্তর কথা কেউ শুনতে চান নি।

তারপর তিনি আরেকটি হাসপাতলে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেও সাফ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যসাথী বিভাগের শয্যা ফাঁকা নেই। শেষমেষ বৃদ্ধ বাবাকে বাঁচাতে আলিপুরের একটি হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করান। সেখানে দুপুরের মধ্যে এক লক্ষ টাকা বিল হয়। “ওই বেসরকারি হাসপাতাল টি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় না থাকায় স্বাস্থ্য বীমার ১ লক্ষ টাকায় দিয়ে দেওয়া হয়। এর থেকে বেশি খরচ করার সামর্থ্য আমাদের নেই। তাই আবার অন্যত্র হাসপাতালের সন্ধান শুরু করি”। জানিয়েছেন সুদীপ্ত।

ওই বৃদ্ধার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আসন্ন বিধানসভার আগে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেই কার্ড দেখিয়ে যখন কোন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা যায় না। তাহলে সেই কার্ডের কি দরকার?