পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ বাংলার বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। গতকাল কোচবিহারের শীতলকুচি তে ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত বাংলা।
শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত ৪, মৃত ব্যাক্তিরা তৃণমূলের সমর্থক বলে দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ রবিবার শীতলকুচিতে যাওয়ার কথা ছিল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর। তবে তিনি আজ কোচবিহারের শীতলকুচি তে যাননি। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৭২ ঘন্টার ভিতরে শীতলকুচিতে কোন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা প্রবেশ করতে পারবেন না।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী মমতা আজ কোচবিহারের শীতলকুচি তে যান নি। তিনি আজ সকাল সকাল জলপাইগুড়িতে বিধানসভা নির্বাচনের ভোট প্রচারে বেরিয়েছেন। একই দিনে বিতর্কিত মন্তব্যে জড়ালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন, “শীতলকুচিতে দেখেছেন তো কি হয়েছে। জাগায় জাগায় শীতলকুচি তৈরি হবে”। এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আবার তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
আজ দিলীপ ঘোষ বক্তব্য রেখেছেন, “ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করার দিন চলে গিয়েছে। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ১৭ তারিখ সকালে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন। বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মজুদ থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলকুচিতে দেখেছেন তো কি হয়েছে। জাগায় জাগায় শীতলকুচি তৈরি হবে।”
এছাড়াও শীতলকুচিতে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদেরকে দুষ্টু ছেলে বলে মন্তব্য করেছেন দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “তৃণমূলের আমলে মা-বোনেরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারেন না। বাড়ির মেয়েরা টিউশন গেলে চিন্তায় থাকে পরিবার। বাজারে গেলে মা বোনেদের আঁচল ধরে টানা হয়, হাত ধরে টানা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে দিদি বলে দুষ্টু ছেলে।” প্রশ্ন করে দিলিপ ঘোষ বলেন, “এত দুষ্টু ছেলে কোথা থেকে এলো? ওই দুষ্টু ছেলেরাই কাল কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা বাংলায় থাকবে না। সবে শুরু হয়েছে। যারা ভাবছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বন্দুকটা দেখানোর জন্য নিয়ে এসেছে, তারা বুঝে গিয়েছে, ওই গুলির গরম কেমন। সারা বাংলায় এটা হবে।”
আজি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শীতলকুচিতে না যেতে পেরে, মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললেন । তা নিয়েও দিলীপ ঘোষ, মমতাকে আক্রমণ করে বলেন, “সারা জীবন লাশের রাজনীতি করছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা। কোচবিহারের লাশ তুলতে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন রাস্তায় লাশ ফেলে বসবেন। তৃণমূল সুপ্রিমো বলবেন, দেখুন আমার লোকেদের মেরেছে। ভোটটা আমাদের দিন”।
এমন মন্তব্য করে দিলীপ ঘোষ জানান, “নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছে। ওই উপদ্রুত এলাকায় কোন নেতা-নেত্রীকে ঢুকতে দেওয়া হবে না, যাতে কেউ আগুন জ্বালাতে না পারে। তাই খুব কষ্ট হচ্ছে। শিলিগুড়িতে গিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করছেন। উনি বুঝতে পেরেছেন, মানুষ ভোট দেবেন না।”
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের এমন মন্তব্য কে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস।