পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ রামপুরহাট গণ হত্যাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আজকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, আইনের ওপর মানুষের আস্থা বজায় থাকছে না। তাই আইনের উপর মানুষের আস্থা বজায় রাখতে সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন।
আজই এই মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর তারপর থেকেই সিবিআই ও কলকাতা হাইকোর্টের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলের একাধিক তাবড় তাবড় নেতারা। এমনকি এই নির্দেশের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। তার দাবি, আদালত, রাজ্যপাল এবং সিবিআই মিলে যদি সবকিছু করে তাহলে রাজ্য সরকারের কিসের প্রয়োজন।
তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য এদিন টুইট করে লিখেছেন, “সব তদন্তই যদি সিবিআই করবে তাহলে রাজ্য সরকার রাখার মানে কি? আদালত, রাজ্যপাল এবং সিবিআই মিলেই তবে রাজ্য চালাক! নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন নেই।” শুধু দেবাংশু ভট্টাচার্যই নয়, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষও।
সব তদন্তই যদি সিবিআই করবে তাহলে রাজ্য সরকার রাখার মানে কি? আদালত, রাজ্যপাল এবং সিবিআই মিলেই তবে রাজ্য চালাক! নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন নেই।
— Debangshu Bhattacharya Dev (@ItsYourDev) March 25, 2022
কুনাল ঘোষ এদিন একটি বেসরকারী সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “এই মামলায় সিবিআই তদন্ত হয় কি করে? বিজেপির রাজ্যে যতগুলি গণহত্যা হয়েছে, সিপিএম জমানায় যতগুলি গণহত্যা হয়েছে, সেখানে একটা ছবি দেখান যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। রাজ্য সরকার যেখানে সমস্ত ব্যবস্থা নিচ্ছেন সেখানে সিবিআই কেন? বিজেপির দুই ভাই, ইডি আর সিবিআই। সিবিআই নিরপেক্ষ নয়। ওরা বিজেপির পক্ষে। হাথরাশ, উন্নাও, লখিমপুরে গণহত্যা হলেও সিবিআই হয় না কেন ? সবাই বিজেপির কেনা। সিবিআইও।”
জানিয়ে রাখি, সিবিআই তদন্তের নির্দেশে রাজ্যের শাসক দল সরব হলেও, বিরোধীরা সিবিআইকে স্বাগত জানাচ্ছে। রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে এবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, “রামপুরহাটের ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং হৃদয়গ্রাহী। জনমানসে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে এই ঘটনা। আইনের উপর মানুষের আস্থা রাখতে উপযুক্ত তদন্তের প্রয়োজন। যাতে প্রকৃত সত্য সামনে আসে, তাই সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন।”
রামপুরহাট কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিল বিজেপির আইনজীবী। তবে এদিন বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, “পুরো ঘটনাটিতেই তৃণমূলের যোগ রয়েছে। এহেন বর্বরোচিত ঘটনায় যে সমস্ত নাম সামনে এসেছে তারা প্রত্যেকেই তৃণমূল নেতা। গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই ডিজিকে বললেন কার বিরুদ্ধে কোন কেস দিতে হবে। আর তাতেই পরিষ্কার যে, বিষয়টি কোনও মতেই নিরপেক্ষ নয়। ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডলের নাম জড়ালে মুখ্যমন্ত্রী বন্ধ ঘরে পুলিশকে নির্দেশ দেবেন তাঁকে ছেড়ে দিতে। তখন পুলিশের সাহসই হবে না ব্যবস্থা নেওয়ার।”