mamata banerjee, joyprakash majumdar, জয়প্রকাশ মজুমদার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, corona vaccine, free vaccine
ছবি - সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গ ডেস্কঃ করোনার জেরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। রাজ্যের পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো নয়। দৈনিক সংক্রমনের গ্রাফ কিছুটা নিচে নামলেও, ফের ঊর্ধ্বমুখী যাত্রা শুরু করেছে সংক্রমনের সংখ্যা।

করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, রাজ্যের সমস্ত মানুষকেই বিনা মূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে এবার ভ্যাকসিন ইস্যুকে কেন্দ্র করে সরব হলেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে নিশানায় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি।

বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার দাবি করেছেন, মহামারী করোনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার যতটা ভ্যাকসিন দিতে সক্ষম হয়েছে। তার বেশিরভাগ ভ্যাকসিন কেন্দ্র সরকার বিনামূল্যে পাঠিয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

মুখ্যমন্ত্রীর বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টি-কে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা এখন কোথায় গেল?’

প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এর প্রভাবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে অপ্রতুল্য হয়ে পড়েছিল বেড। হা হা কার দেখা দিয়েছিল অক্সিজেনের। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে একমাত্র ভরসা ছিল করোনা ভ্যাকসিন। তবে সেই মুহূর্তে করোনা ভ্যাকসিনেরও আকাল দেখা গিয়েছিল দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে কেন্দ্র সরকারের কাছে কোভিড ভ্যাকসিন চেয়ে না পাওয়ায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকেই দোষারোপ করেছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই টিকা করন করা হবে। কেন্দ্র সরকার দিক বা না দিক রাজ্য সরকার কিনে রাজ্যের মানুষকে টিকাকরণ করবে রাজ্য সরকার। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে একটি বৈঠক করেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বৈঠকে বলেন, “রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কোভিড ভ্যাকসিন এর জন্য যত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তা সবই খরচ করেছি। রাজ্যের ১ কোটি ৪৪ লক্ষ মানুষকে করোনা টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য সরকার।”

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “এক একটি কোভিড ভ্যাকসিনের ডোজ কিনতে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা লাগছে। প্রতিনিয়ত শ্রমিক, হকার, মৎস্য বিক্রেতা ও সবজি বিক্রেতা এবং গাড়ির চালকদের বিনামূল্যে করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত রাজ্যের সাত কোটি মানুষ করোনা টিকা পাননি।” শিশুদেরকে বাদ দিয়েই এই পরিসংখ্যান ধরা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য কে ঘিরে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “সরকারের দেওয়া বিনামূল্যের ভ্যাকসিন রাজ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এমনকি ভ্যাকসিন কেনার পর ভ্যাকসিন এর রশিদ দেওয়া হচ্ছে না।” এছাড়াও তার অভিযোগ, “বেশ কিছু জায়গায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের করোনা টিকা দেওয়া হচ্ছে না। দুই এক জনকে দেওয়া হলেও, সবাইকে দেওয়া হচ্ছে না। এমনভাবে করোনা টিকা দিলে, কিভাবে সুরক্ষিত থাকবে রাজ্যের মানুষ?” প্রশ্ন করেন তিনি।

রাজ্য সরকার বিনামূল্যে রাজ্যের মানুষকে টিকাকরণ করবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে বিষয়ে বিজেপি নেতা জয় প্রকাশ বলেন, “এখনো পর্যন্ত রাজ্যের দেড় কোটি মানুষকে টিকা করন করা হয়েছে। তার মধ্যে ১ কোটি ২৫ লক্ষ ভ্যাকসিনের পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার, যা এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকারের কাছে জমা রয়েছে। রাজ্য সরকারের টাকায় শুধু মাত্র ২৭ লক্ষ কোভিড ভ্যাকসিন কিনেছে। আর এরই মধ্যে বলছে টাকা শেষ?”